সোনালী ব্যাংক অফিসার্স ফোরাম-২০১১ এর বর্ণিল আনন্দযজ্ঞ

প্রকাশিত: ৮:২৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ৫, ২০২৩

মো. আবুল কালাম আজাদ :

ফাগুনের আগুনঝরা বসন্ত ! পলাশ ফূটেছে, শিমুল ফুটেছে ! প্রকৃতি তার আপন মনে রঙের পশরা সাজিয়ে চারদিকে মৌতাত ছড়াচ্ছে। কোকিলের কুহু ডাক সব বয়সের মানুষের মনে জাগিয়ে তুলেছে আলোড়ন ! বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাস এখানে ওখানে সবখানে সর্বত্র । সবকিছু ছাড়িয়ে আবেগী মানুষেরা প্রকৃতির আগুনে নিজেকে সমর্পণ করে চলেছে ভাবে, আবেগে, মমতায়, ভালোবাসায়, রোমান্টিকতায় ! কেউ কেউ তার নিজেকে উজাড় করে পুরোটাই সমর্পিত করেছে ভালোবাসার পাত্রে । নীল আকাশ। শুভ্র মেঘ ! শিউলি ঝরা প্রভাত ! কুয়াশার সূচী শুভ্র উত্তরীয় ঝরিয়ে প্রকৃতি যখন শীতের ফসলভরা সোনাঝরা দিনগুলো ছেড়ে চির রঙিন বসন্তের দ্বারে তার নিজেকে সমর্পণ করেছে। ঠিক তখনই নিজেকে বসন্ত সাজে রাঙিয়ে, নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে ম্যাজিক আইল্যান্ডের উন্মুক্ত চত্বরে । সকাল পেরিয়ে দুপুর আসন্ন, জমকালো সাজে দলে দলে মানুষ আসছে দেশের নানান প্রান্ত হতে।

সোনালী পরিবারের সর্ববৃহৎ কর্মীবাহিনী ব্যাচ-২০১১ হই-হুল্লোড় আর আনন্দ আয়োজনে শরিক হতে প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন ডিভিশন, ঢাকার বিভন্ন শাখা, নোয়াখালী, রংপুর, ফরিদপুর, নরসিংদী, মাদারীপুর, ময়মনসিংহ, গাজীপুর সহ সকল প্রান্তের অফিসারদের সরব উপস্থিতি কাঁপিয়ে দিয়েছে ম্যাজিক আইল্যান্ডকে। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, রুপাসা থেকে পাথুরিয়া ! আমি, তুমি এবং আমরা সবাই মিলে একটি ইতিবাচক স্বপ্ন বুননের মধ্য দিয়ে জাগিয়ে তুলবো সোনালী ব্যাংকটিকে, জাগিয়ে তুলতে চাই পুরো বাংলাদেশকে।  প্রয়াত সব্যসাচী সৈয়দ শামসুল হকের মতো করে আমরা বলতে চাই “জাগো বাহে, কোনঠে সবায় !” এমন আবেগঘন আর রোমাঞ্চকর বর্ণনা বা বন্দনা গীতে কেউ ভাবছেন আজ বসন্ত উৎসব অথবা ভালোবাসা দিবস ! না, এসবের কিছুই না। আজ আমাদের বনে ভোজন। তাই আমরা ছুটে যেতে চাই অন্য কোনখানে। যেখানে আজ আর কোন নিত্য কাজের ঝামেলা নেই, রুটিন ওয়ার্ক নেই। আজ শুধুই হই হুল্লোড়, ছুটে চলা, আর যার যার প্রিয়জনের সাথে, প্রিয় ব্যাচমেটদের সাথে ক্যামেরা বন্দি হওয়ার দিন। দুই শতাধিক সোনালী কর্মীর একসাথে হয়ে সুখ-দুঃখ আর আনন্দ-বেদনা ভাগাভাগি করার মহাযজ্ঞ। জমে উঠেছে আনন্দ আয়োজন। শর্টকাট আর আয়েশি পোশাকে ততক্ষণে অনেকই নেমে গেছে ওয়াটার ল্যান্ডে। ধাপাধাপিতে কেউ জলের নিচে টেনে ধরছে একে অপরকে। জলকেলি চলাকালীন পুরো সময় জুড়ে সদা তৎপর শাকিব এই আনন্দক্ষণের লাইভ টেলিকাস্ট করার কাজে । কখনো কারও কারও সাথে খুনসুটি করে স্থিরচিত্র ধারণও করেছে শাকিব। পুরো আয়োজনে শিশুদের জন্য বিভিন্ন ইভেন্ট, পিলো পাসিং সহ আকর্ষণীয় সব ইভেন্টে সকলের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণ আয়োজনকে সমৃদ্ধ করেছে। ততক্ষণে দুপুরের খাবার প্রস্তুত। টোকেন দিয়ে খাবার সংগ্রহের সুশৃঙ্খল আবহ প্রশংসীয়। মধ্যাহ্ন ভোজের পরপরই সাংস্কৃতিক পরিবেশনা বন্ধুদের গানে, কবিতায়, নৃত্যে ম্যাজিক আইল্যান্ড জুড়ে এক ভিন্ন মাত্রা ছড়িয়ে পরেছে। সহকর্মী নাঈমা নাজনিনের পাংখা পাংখা, নান্টু– ঘটক সবাইকে মাতিয়ে দিয়েছে এবং তার মেয়ে পূর্ণার নৃত্য পরিবেশন ছিল উপভোগ্য।  ছোটদের দৌড়ে বিজয়ীরা হল মাহিদ জামান রায়ান, ওমর আব্দুল্লাহ, মেহেরব মোস্তাফিজ।

বড়দের দৌড় প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা হল সালমান শাহরিয়ার, শেখ আলিফ, ঔমন ভৌমিক। পিলো পাসিং বিজয়ীর তালিকা আছে শামিমা নাসরিন, আফরোজা এবং তনু। বল নিক্ষেপে বিজয়ীর তালিকায় রয়েছে  শরিফুল ( গোপালগঞ্জ), সাইফুর (গোপালগঞ্জ) এবং ইমরান (ঝিনাইদহ।  বিশেষ পুরস্কার প্রাপ্তির তালিকায় রয়েছে  যায়েদ ভূইয়া (ছড়া), পরশ মুন্সি(অভিনয়) যা সুলতান মাহমুদ এর সৌজন্যে প্রদান করা হয়েছে। নায়ক মান্নার ডায়লগ সম্বলিত পরশ মুন্সীর একক অভনয় সকলের নজর কেড়েছে। ইতোমধ্যে গানের পাখি খ্যাত জাহিদ মোহাম্মদ এবং অতিথি শিল্পীর একক ও দ্বৈত পরিবেশনা ম্যাজিক আইল্যান্ড নাড়িয়ে দিয়েছে। আর জমজমাট সকল সঙ্গীতের সাথে মঞ্চের বাইরে কখনোবা মঞ্চে বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান, শাহরিয়ার জাহান, ইমরান, পলাশ আনিসুর রহমান, এম এ কাদের, প্রদীপ কুমার সরকার, আনুয়র আলো ফয়সল, মাহমুদুর রহমান, হামিদুল ইসলাম, রাশিদুল ইসলাম, সোহেল রানা, মৃত্যুঞ্জয় রায়, ফারুক হোসেনের অব্যাকরণ সুলভ আউলা ঝাউলা অঙ্গভঙ্গি সমেত ন„ত্য ম্যাজিক আইল্যান্ডের ভিত দুর্বল করে দিয়েছে। পশ্চিম আকাশে সূর্য ডুবে ডুবে অবস্থা, কেউ চেয়ার ছাড়ছেননা, কিন্তু কেন। তখনো বাকি রয়েছে গেছে আকর্ষণীয় র‍্যাফেল ড্র, যার বিপরীতে বিশটি আকর্ষণীয় পুরস্কার অপেক্ষা করছিল প্রিয় সহকর্মীদের জন্য। র‍্যাফেল ড্রর টিকেট নিয়ে অপেক্ষার পালা শেষে উঠাও বাচ্চা – এই উচ্চারণ সবার ক্লান্তি ভুলিয়ে দিয়েছে। কারও ভাগ্যে জুটল আর কেউবা বিষণ্ণ মনে টিকেট বিক্রি করবার চেষ্টা করলো। কিন্তু কিছুতেই কিছু হওয়ার নয়। এবার ফিরে চলা। ততক্ষণে সন্ধা পেরিয়ে রাত। সবাই যার যার বাড়ি ফিরে যায়। পরেরদিন আবারও কাজে ফিরতে হবে । প্রিয় সোনালী ব্যাংকের জন্য যে যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে যেন আমরা অনন্য উচ্চতায় নিজেদের মাতৃসম প্রতিষ্ঠানকে পৌঁছে দিতে পারি। আমাদের অঙ্গীকার হোক সোনার বাঙলা বিনির্মাণ, আমরা দেশ মাটি আর মানুষের কল্যাণে নিজেকে সদা প্রস্তত রাখবো — তাহলেই কেবল ত্রিশ লক্ষ শহিদের আত্মা শান্তি পাবে।  জয়তু সোনালী ব্যাংক অফিসার্স ফোরাম-২০১১। দেশব্যাপী সোনালী ব্যাংক অফিসার্স ফোরাম-২০১১ এর সকল প্রিয় সহকর্মীদের সম্পৃক্ত করে সুশৃঙ্খল আয়োজনের নেপথ্য কুশীলবদের মধ্যে ছিলেন সাকিব, জাহিদ, মোমিন, আশরাফ, শরিফ, শরিফ-২, নঈম ও শাহদাত রুবেল প্রমুখ । জয়তু সোনালী ব্যাংক।