দুর্গাপুরে মাদকসেবী স্বামী অমানুষিক নির্যাতন করে দাঁত ভেঙে দিল স্ত্রীর

প্রকাশিত: ৬:৫৩ অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০২১

কলিহাসান,দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি:
নেত্রকোণার দুর্গাপুরে মাদকসেবী স্বামীর অমানুষিক নির্যাতনে এক গৃহবধূ এগার মাসের বাচ্চা নিয়ে পাঁচদিন ধরে পিত্রালয়ে বসবাস করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি গৃহবধূ শামসুন্নাহার (৩৫)কে মারপিট করে মুখের সামনের অংশের একটি দাঁত ভেঙে ফেলে পাষ- স্বামী মিলন মিয়া (৪৫)। সে বিরিশিরি ইউনিয়নের কানিয়াইল গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে।

গত ১২ জুন দুপুরে মদ্যপ অবস্থায় বাসায় ফিরে স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর,গলাটিপে হত্যা চেষ্টার ঘটনাটি ঘটায়। এগার মাসের শিশুটিকে বিড়ির আগুন দিয়ে গাঁ পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগও রয়েছে পিতা মিলন মিয়ার বিরুদ্ধে। মিলন মিয়া পেশায় একজন ভ্যান চালক।

গৃহবধূ শামছুন্নাহার অসহ্য নির্যাতন ও বেশক’টি গ্রাম্য সালিশেও কোন সুফল না পেয়ে গত ১৬জুন বিকেলে দুর্গাপুর থানায় মিলনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করে ভুক্তভোগী। অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেন থানার ডিউটি অভিসার এএসআই মিলন মিয়া।

ভুক্তভোগী এগার মাসের শিশুকে কোলে নিয়ে নির্যাতনের বিষয়ে প্রতিবদেককে জানান, মদ পান কওে আমাকে গলাটিপে হত্যা করতে চেষ্টা চালিয়ে আসছে। আমার সন্তান সায়াদ (১১ মাস) বিড়ির আগুন দিয়ে শরীর পুরে ফেলার চেষ্টা করে। প্রতি রাতে মদ খেয়ে এসে মারধর যেন নিত্যদিনের চিত্র। আমি আর পারছিনা। কোলের সন্তানের দিকে থাকিয়ে মরতেও পারছিনা। আমার টাকা দিয়ে মদ খাবো, কার বাপের কি আসে যায় বলে নানা ধরণের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে সারাক্ষণ।

স্বামীর এহেন আচরণে আমার একমাত্র মেয়ে মিনারা খাতুন (১৫)কে অপ্রাপ্ত বয়সে বিবাহ দিতে বাধ্য করেছে। আর কত নির্যাতন সহ্য করবো, হয় ওর বিচার কইরা দেন, নইতো আমাকে বিষ কিনে দেন বলে কান্না করতে থাকেন গৃহবধূ শামসুন্নাহার। স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতনের বিষয়ে মিলন মিয়ার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মদ খাই, এটা নিয়ে আপনার মাথা ঘামানোর দরকার আছে। স্বামী স্ত্রীকে মারধর করার অধিকার রয়েছে। তাই মারধর করি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রুহু বলেন, মিলন একজন মাদকসেবী। তার স্ত্রীকে মারধরের বিষয়টি আমাকে একাধিকবার জানিয়েছে। তবে মিলন গ্রাম্য সালিশের পর আর বেপরোয়া হয়ে পড়ে।

দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) শাহনুর-এ আলম জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলমান রয়েছে। অভিযুক্তকে অবশ্যই আইনের আওতায় সোপর্দ করা হবে।