৫ বছর পর হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে ফিরে পেলেন মা

প্রকাশিত: ১১:০৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ১০, ২০২৩
শাহ্ আলম ভূঁইয়া, নিজস্ব প্রতিবেদক, নান্দাইল থেকে: 
৫ বছর নিখোঁজ থাকার পর অবশেষে মায়ের কোলে ফিরে এসেছে ১৭ বছরের তৌহিদুজ্জামান রিমন।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ)বিকালে রিমন মায়ের কাছে ফিরে আসে। রিমনের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বীরবেতাগৈর ইউনিয়নের বীর কামটখালী গ্রামে। কামরুল ইসলাম ও খাদিজা আক্তার দম্পতীর বড় ছেলে রিমন।
দীর্ঘ ৫ বছর পর নিজের ছেলেকে কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন রিমনের মা,দাদা ও দাদী ৷ রিমনের পিতা দুবাই প্রবাসী। হারানো ছেলেকে পেয়ে অনেক খুশি রিমনের পরিবার। যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
৫ বছর পর নিজ গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসার ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি  স্বজনদের মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা। খবর পেয়ে শত শত নারী-পুরুষ ছুটে আসছেন রিমনকে একনজর দেখতে। এ সময় হাঁসি-কান্নার এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,১২ বছরের কিশোর রিমন বাড়ির পাশে স্থানীয় একটি কওমি মাদ্রাসায় হেফজ শাখায় পড়াশোনা করতো।
৫ বছর আগে ২০১৮ সালের ২৭ এপ্রিল একদিন কাউকে কিছু না বলেই মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর তার পরিবার বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে,মাইকিং করে এবং রিমনের পিতা নান্দাইল মডেল থানায় একটি জিডি করে।কিন্তু ছেলের সন্ধান পায়নি।
সরেজমিন (১০ মার্চ) দুপরে তৌহিদুজ্জামান রিমনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়,শত শত নারী-পুরুষ রিমনদের বাড়িতে ভীড় জমিয়েছেন একনজর রিমনকে দেখতে। এদেখা যেন শেষ হয়না।অনেকেই মোবাইলে ভিডিও ও ছবি ধারণ করছেন।
ছেলেকে ফিরে পেয়ে মা খাদিজা আক্তার আবেগে আপ্লুত হয়ে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ছেলেও মাকে ফিরে পেয়ে মাকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকেন। এই দৃশ্য দেখে উপস্থিত শতাধিক নারী পুরুষের চোখের পানি চলে আসে।
এ সময় মা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমি জানতাম আমার কলিজার টুকরা ছেলে রিমন আমার কোলে ফিরে আসবে।সবসময় আল্লার কাছে এই দোয়াই করেছি। আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করেছেন
রিমনের দাদা আবুল কাশেম বলেন, ১২ বছর বয়সে আমার নাতি মাদ্রাসা থেকে হারিয়ে গিয়েছিল। অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। আজ নাতিনকে ফিরে পেয়েছি। আমাদের আনন্দের যেন শেষ নেই।আমরা সবাই খুব খুশী।
রিমনের দাদী রোকেয়া আক্তার বলেন,আমার নাতিনের জন্য আল্লাহর ঘরে মান্নত করছিলাম। আজ আমার নাতিনরে ফিইরা পাইছি। আমার নাকের স্বর্ণের ফুল,৫ শ টেহা এবং একটা মোমবাতি মসজিদে দান করছি।
মোবাইল ফোনের সামনে কথা বলতে রাজি হয়নি রিমন।মায়ের সাথে ছবি তোলতে চাইলে রাজি হয়নি এবং কোন ছবি তোলতে দেয়নি।
তৌহিদুজ্জামান রিমন বলেন,৫ বছর আগে আমি মাদ্রাসা থেকে ঢাকা গেছিলাম। সেখানে ৫ মাস একটি ব্যাগ কোম্পানিতে কাজ করছি।পরে গেছি সেন্টমার্টিন। সেখানেই ছিলাম আমি।এর বেশী রিমন কিছু বলতে চায়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আজিজুল হক বলেন,৫ বছর পর রিমন বাড়িতে ফিরে এসেছে। রিমনের পরিবার এবং আমরা এলাকাবাসী খুব খুশী।