এম.এ খালেক হালুয়াঘাট(ময়মনসিংহ)প্রতিনিধি :
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার বাহির শিমুল উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আক্কাছ আলী ও প্রধান শিক্ষক একেএম আব্দুস সালাম চৌধুরী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে অফিস সহায়ক পদে ৭ লক্ষ টাকা নিয়োগ বাণিজ্য, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ময়মনসিংহের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৫ নং আমলী আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পশ্চিম বাহির শিমুল গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিনের পুত্র মফিকুল ইসলাম বাদী ন্যায় বিচারের আশায় গত ১৩ ডিসেম্বর মামলাটি দায়ের করেন। যাহার মামলা নং-৪৯৫। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন।
মামলার বিবরণে প্রকাশ বিদ্যালয়টি পরিচালনার স্বার্থে বাহির শিমুল উচ্চ বিদ্যালয়ের শূণ্য পদে অফিস সহায়ক নিয়োগ করা হবে জানতে পেরে ভুক্তভোগী তার ছোট ভাই কামরুল ইসলামকে উক্ত পদে চাকরির জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন বিষয় জানতে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আক্কাছ আলী ও প্রধান শিক্ষক একেএম আব্দুস সালাম চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করলে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে স্কুলের উন্নয়নের জন্য ১০ লক্ষ টাকা দাবী করেন। পরে আলোচনার এক পর্যায়ে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিকালে স্থানীয় বাহির শিমুল বাজারের খাঁন মার্কেটের নিজ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম চৌধুরীর হাতে নগদ ৭ লক্ষ টাকা বুঝিয়ে দেন। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির সভাপতিসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে কামরুল ইসলামের চাকরি না দেওয়ায় গত ১০ ডিসেম্বর আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরতের জন্য নিজ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে সালিশ দরবারের আয়োজন করা হয়। সালিশে প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম চৌধুরী ও সভাপতিসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় টাকা নেওয়ার বিষয়টি সকলেই অস্বীকার করেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অন্য প্রার্থীর চাকরি চুড়ান্ত করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, ভিটে মাটি বিক্রি করে টাকা দেয়া ভুক্তভোগী পরিবারটি এখন দূবিষহ দিনাতিপাত করছেন। নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে নিজের টাকা ফেরত পেতে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানান।
মামলার বাদী মফিকুল ইসলাম ও স্থানীয় সুজন মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, মফিকুলের ৭ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার পরেও ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে আল-মামুন নামের একজনকে চাকরি দিয়েছেন। তাদের টাকাগুলি ফেরত দাবী করেন।
এ ঘটনায় বাহির শিমুল উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আক্কাছ আলী সাংবাদিকদের কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি । তবে বাহির শিমুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম আব্দুস সালাম চৌধুরী বলেন, সরকারি বিধি-মোতাবেক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। গত ২২ ডিসেম্বর বাহির শিমুল গ্রামের আল-মামুনকে নিয়োগ প্রদান করে ডাকযোগে পত্র প্রেরণ করেছেন। তিনি কোন ব্যক্তির নিকট থেকে টাকা নেননি বলে জানান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য একটি কমিটি রয়েছে। এই কমিটি নিয়োগ ও বাছাইয়ের কাজ করে। এই কমিটি শুধু মাত্র সুপারিশ করে থাকে। নিয়োগ সম্পন্ন করেন ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। নিয়োগের ঘটনায় মামলা মোকাদ্দমার বিষয়টি তিনি অবগত নন।
হালুয়াঘাট থানার অফিসার ইনচাজ ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহীনুজ্জামান খাঁন বলেন, বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক প্রেরিত মামলাটি পেয়েছেন,শিঘ্রই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রেজাউল করিম বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছেন। কোন অনিয়ম পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবেন।