কলিহাসান, দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি :
নেত্রকোণার দুর্গাপুর পৌরসদরে ১৪টি প্রকল্পের আওতায় আরসিসি রাস্তা,ড্রেন নির্মাণ,আধুনিক ব্রীজ ও নান্দনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণে ৫কোটি ৩৫লক্ষ ৫৩ হাজার টাকার উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে চলমান রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে দুর্গাপুর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী উত্তম কুমার দাস ও উপ সহকারী প্রকৌশলী রাজু আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,দুর্গাপুর পৌরসভা ১৯৯৪ সালে স্থাপিত হয়। প্রথম জনগণের ভোটে পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন কামাল পাশা। পরে সরকার গেজেট করে পৌর চেয়রাম্যান পদটিকে পৌর মেয়র পদে রুপান্তরিত করেণ। তৃতীয় শ্রেণির পৌরসভা থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির পৌরসভায় উন্নিত হয়েছে সম্প্রতি। সর্বশেষ গত ৩০ জানুয়ারি ২০২১সনে দলীয় নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জনগণের সেবক নির্বাচিত হন পৌর মেয়র মো. আলা উদ্দিন।
সদিচ্ছা থাকলে সবকিছুই সম্ভব। তবে বর্তমান পৌরসভার অনেক সংকট রয়েছে। তবে যতেষ্ট স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চাই সবার আগে।জনগণের সামনে সবকিছু তুলে ধরলে কোনটা খারাপ আর কোনটা ভালো তারা নিজেরাই বলে দেবে। আমার পরিকল্পনা রয়েছে, এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করা। আমার জন্মসস্থানে গ্রামে। বেড়ে ওঠা শহরে। সব অলিগলি আমি চিনি। তবে নিশ্চয় পরিস্থিতি বদলাতে পারবো।
একটি পরিচ্ছন্ন, জলাবদ্ধতা,যানজটমুক্ত,পৌর শহরের প্রতিটি রাস্তা আরসিসি ঢালাই, প্রতিটি ব্রীজ আধুনিক মানের, সড়ক উন্নয়ন ও পৌরবাসীর জন্য সোপেয় পানি নিশ্চিতে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছি। আমার এ উন্নয়নমূলক কর্মযজ্ঞের মধ্যে ‘খ’ শ্রেণির পৌরসভা থেকে ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভায় রুপান্তর করতে সর্বাত্বক চেষ্টা অব্যাহত আছে। উপজেলা প্রতিনিধি কলি হাসানের সঙ্গে উন্নয়ন ও ভাবনা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র মো. আলা উদ্দিন।
উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ও গণমানুষের সেবক হিসেবে কাজ করার প্রত্যয় নিয়ে মেয়র বলেন, আমি পৌরসভায় দায়িত্ব গ্রহণের পর পৌরশহরে দুটি দরপত্র আহবান করেছি। তন্মধ্যে ১১টি প্রকল্প পৌরসভার রাজস্ব তহবিল এর বরাদ্দ দিয়ে ৭টি আরসিসি রাস্তা নির্মাণ,দুটি আরসিসি ড্রেন নির্মাণ, বেলতলী খালের ওপর আধুনিক মানের একটি ব্রীজ নির্মাণ,দুর্গাপুর বাজারের ফল মহালের কাছে নান্দনিক মানের পাবলিক টয়লেট নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। আর তিনটি প্রকল্পের এডিপি’র অর্থায়নে দুটি আরসিসি ড্রেন নির্মাণ ও অন্যটি পৃথক জায়গায় দুটি সাবমারসিবল নির্র্মাণ প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে। সবক’টি প্রকল্প ২০২১-২০২২ অর্থবছরের অর্থায়নে ৫ কোটি ৩৫ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকা দরপত্র আহবান পূর্বক উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের কাজ চলমান।
উন্নয়ন পরিকল্পনা মোতাবেক বাস্তবায়নের মাধ্যমে দুর্গাপুর পৌরসভাকে একটি মডেল শহরে রুপান্তরিত করব ইনশাল্লাহ। পৌরশহরে ধূলোবালি মুক্ত রাখতে নিয়মিত পানি ছিঁটানো হয়। শব্দদূষণ ও যানজট মুক্ত রাখতে পৌর কর্তৃপক্ষ সব সময় সচেতন রয়েছে। পৌরবাসীর দুঃখ-কষ্ট যতটা সম্ভব লাঘব করে উন্নয়নের সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়াটা আমার কর্তব্য। আমি সবাইকে নিয়ে সেই কাজটা করে যাচ্ছি। পৌরবাসীর খাদ্য, বাসস্থান,স্বাস্থ্য, শিক্ষা সহ মৌলিক চাহিদার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে আমি পরিকল্পনামাফিক ওয়ার্ডভিত্তিক সকল জনগণের অংশগ্রহণে উঠোন বৈঠক করেছি ও প্রতিটি ওয়ার্ডে সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য শুনেছি,চাহিদা নোট করেছি।
সর্বসাধারণের ইচ্ছামাফিক মাস্টারপ্ল্যানে সেগুলো নিরসনে কাজ করে যাচ্ছি। চিহ্নিত অন্যগুলি কর্মকান্ড পাইপলাইনে রয়েছে। ধীরে ধীরে সেগুলোও বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি আরো বলেন, পৌরবাসীর নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য আমি সবার সর্বাত্বক সহযোগিতা চাই। নির্বাচনের সময় যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা আন্তরিকভাবে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছি। দল-মত নির্বিশেষে সব বর্ণের মানুষ যাতে উন্নয়নের সুফল পায় সেই চেষ্টা আমি করে যাচ্ছি। আর কোন চাওয়া কিংবা পাওয়ার কিছুই নেই আমার।
বিগত সময়কার চেয়ে সকল উন্নয়নমূলক কাজে শতভাগ স্বচ্ছতার সাথে প্রতিটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কোয়ালিটি সম্পন্ন কাজের ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। সকল কাউন্সিলর,কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।
পৌরবাসীর কল্যাণে প্রয়োজনীয় বরাদ্দের জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেণ। পৌরবাসীকে ধের্য্যের সাথে উন্নয়ন মূলক কর্মকা- চলমান থাকায় সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখও প্রকাশ করেণ।
০১৭১৩-৩২০৩৫৯