মতিউর রহমান সেলিম, ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
একদিকে চৈত্রের প্রচন্ড তাপদাহ, অপরদিকে রমজান মাস তবুও ময়মনসিংহের ত্রিশালে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১২ ঘন্টা থাকছে না পল্লী বিদ্যুতের বিদ্যুৎ সরবরাহ। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত টানা ৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ ছিল না। শনিবার সকাল থেকে আবারও টানা প্রায় দুইঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। এমন চরম লোডশেডিংয়ে অসহনীয় দুর্ভোগে যেন জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, পিডিবি চাহিদার মাফিক বিদ্যুৎ তাদেরকে সরবরাহ না করায় শুধু ত্রিশাল নয়, ময়মনসিংহ জোনজুড়েই এসমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকদের দেয়া তথ্যসূত্রে জানা যায়, নিদ্রিষ্ট কোন সময়ক্ষণ নয় বরং দিনরাত ২৪ ঘন্টার মধ্যে যখন তখন বিদ্যুৎ যাচ্ছে আবার আসছে। এই যাওয়া আসার মধ্যে প্রায় ১২ ঘন্টা-ই থাকছে না পল্লী বিদ্যুতের বিদ্যুৎ সরবরাহ। কখনও কখনও এমনটাই দেখা যাই যে, টানা ৪/৫ ঘন্টা থাকে না বিদ্যুৎ। বিদ্যুতের এমন চরম লোডশেডিংয়ে চৈত্রের প্রচন্ড তাপদাহে রমজানে রোজাদারসহ শিশু ও বৃদ্ধারা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন। ঘনঘন আর অতিরিক্ত সময় ধরে লোডশেডিং বন্ধে পল্লী বিদ্যুৎগ্রাহকরা সরকার ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিকার না পেলে আন্দোলনে নামবে বলে জানিয়েছেন অনেক গ্রাহক।
ত্রিশাল পৌর এলাকার দরিরামপুর খাবলাপাড়া গ্রামের পল্লী বিদ্যুৎগ্রাহক বজলুর রহমান, রাসেল, হারেছ উদ্দিন, দেলোয়ার হোসেন, আবু সাঈদসহ অন্যরা জানান, সম্প্রতি প্রতিদিন লোডশেডিং চরম আকার ধারন করেছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত টানা ৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ ছিল না। শনিবার সকাল থেকে আবারও টানা প্রায় দুইঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। এভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা বা ২৪ ঘন্টায় ৮/১০ বার লোডশেডিং চললে অসুস্থ হয়ে পড়বে শিশুসহ বৃদ্ধ বয়সিরা।
ত্রিশাল সদর ইউনিয়নের কোনাবাড়ী গ্রামের কামাল হোসেন, ফরহাদ আলম, আমছর আলীসহ স্থানীয় গ্রাহকরা বলেন, সরকার ঘোষিত শতভাগ বিদ্যুতায়নে চরম লোডশেডিং আমাদেরকে বিস্মিত করে। ঘনঘন আর অতিরিক্ত সময় ধরে লোডশেডিং বন্ধে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবি জানাই।
কানিহারী ইউনিয়নের এলংজানী গ্রামের গিয়াস উদ্দিন, বাছির উদ্দিন ও সাদ্দাম হোসেনসহ স্থানীয়রা জানান, পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং চরম আকার ধারন করেছে। রোজাদারসহ শিশু ও বৃদ্ধারা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে।
বাগান গ্রামের নাজিম উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম, রাশেদ রাজ বলেন, পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ নিয়ে বিপাকে পড়েছি। বিদ্যুৎ বিভাগের আইন অনুযায়ি পিডিবির সংযোগও নিতে পারছি না। এমন লোডশেডিং কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। বিরাজমান পরিস্থিতি দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিবর্তন বা এর কোন প্রতিকার না পেলে আন্দোলনে নামবো আমরা।
মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের বিষয়ে ত্রিশাল পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের এজিএম নাঈম জানান, পিডিবি তাদেরকে চাহিদার মাফিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে না। এতে শুধু ত্রিশাল নয়, ময়মনসিংহ জোনজুড়েই এসমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।