রফিক বিশ্বাস, তারাকান্দা (ময়মনসিংহ) থেকে : দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় তারাকান্দা-শ্যামগঞ্জ সড়কের বামনীকোণা থেকে তারাকান্দা অংশের প্রায় ৯ কিলোমিটার ভেঙে বেহাল হয়ে পড়েছে। পিচ ও খোয়া ওঠে সড়কের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ছোট বড়-গর্ত। বৃষ্টি হলেই এসব গর্তে জমে থাকে পানি। এতে বাড়ছে দুর্ঘটনার শঙ্কা। ভোগান্তিতে রয়েছেন এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী হাজারো মানুষ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার রামপুর, গালাগাঁও, কামারিয়া ইউপির অন্তত ৩০টি গ্রাম এবং পূর্বধলা ও গৌরীপুরে ১০টি গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করেন। দুই উপজেলার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী সড়কও এটি। বিকল্প পথ না থাকায় বাধ্য হয়ে এ সড়ক দিয়েই চলাচল করতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। রোগীদের নিয়ে যেতে হয় হাসপাতালে। কিন্তু বেহাল সড়কের কারণে তাঁদের দুর্ভোগ বাড়ছে। বিশেষত গর্ভবতী মায়েদের নিয়ে যেতে বেশি বিপাকে পড়ছেন স্বজনেরা।
স্থানীয়রা জানায়, সড়কটি দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কার করা হচ্ছে না। ফলে পিচ ও ইট-পাথর উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এখন বৃষ্টির পানি জমে দিন দিন বড় বড় গর্তে রূপ নিয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায় সড়কটি। গর্ত হওয়ায় চরম দুর্ভোগে চলছে যানবাহন ও পথচারী। এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে সড়কটি দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন।
পারুলীতলা গ্রামের সিএনজি চালক রহমত আলী ও সবুজ বলেন, সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে গাড়ি চালাতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। প্রতিদিন গাড়ি মেরামতের কাজ করতে হয়। এতে বাড়তি অর্থ ব্যয় হয়ে যাচ্ছে।
পারুলীতলা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আলহাজ্ব মো. তোতা মিয়া বলেন, এ সড়ক দিয়ে সপ্তাহে তিন দিন শ্যামগঞ্জ যেতে হয়। বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত থাকায় যাতায়তে অনেক কষ্ট হচ্ছে। গর্তের কাছে গেলেই মনে হয়, কখন গাড়ী উল্টে যায়।
ভাট্টা বাজারের ব্যবসায়ী মো. সুমন মিয়া জানান, সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় এখানকার ও আশপাশের এলাকার ব্যবসায়ীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। মালামাল পরিবহনে সময় ও ব্যয় বেশি হচ্ছে। এ ছাড়া অন্তঃসত্ত্বা নারী, অসুস্থ ও বৃদ্ধ লোকজন এ সড়কের নাম শুনলেই ভয় পান।
ওই সড়কের পাশেই রয়েছে ভাট্রা মিলন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক জহিরুল ইসলাম এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করেন। তিনি বলেন, চাকরিজীবী, ছাত্রছাত্রী ও ব্যবসায়ীসহ কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করেন সড়কটি দিয়ে। কিন্তু বেহাল দশার কারণে মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
রামপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান বুলে জানান, এ সড়কে চলতে গিয়ে অনেকেই যন্ত্রণায় পড়েন বলে জানিয়েছেন। সড়ক মেরামতের বিষয়ে সমন্বয় কমিটির সভায় তা উত্থাপন করা হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজি ইডি) জানান, ভাঙা সড়কটি সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। অতি দ্রুত সংস্কার করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজাবে রহমত জানান, সড়কটি অতি দ্রুত সংস্কার করা হবে।