ক্রীড়া ডেস্ক : কিছু দিন আগে এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে মালয়েশিয়ার কাছে হেরেছিল জামাল ভূঁইয়ারা। মেয়েদের খেলাতে দেখা গেলো উল্টো চিত্র! ফিফা প্রীতি ম্যাচে র্যাঙ্কিংয়ে ৬১ ধাপ এগিয়ে থাকা মালয়েশিয়াকে বিধ্বস্ত করেছে বাংলাদেশ। ডিফেন্ডার আঁখি খাতুনের জোড়া গোলে স্বাগতিকরা ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে অতিথিদের। বাকি চারটি গোল করেছেন সাবিনা খাতুন, সিরাত জাহান স্বপ্না, মনিকা চাকমা ও কৃষ্ণা রানী সরকার।
অথচ ২০১৭ সালে সিঙ্গাপুরে মেয়েদের তিন জাতির টুর্নামেন্টে এই মালয়েশিয়ার কাছে ২-১ গোলে হেরেছিল বাংলাদে। পাঁচ বছরের ব্যবধানে বড় ব্যবধানে জিতে লাল-সবুজ দল মধুর প্রতিশোধই নিলো।
বৃহস্পতিবার কমলাপুর শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকে আধিপত্য দেখিয়ে খেলেছে বাংলাদেশ। র্যাঙ্কিংয়ে মালয়েশিয়া অনেক এগিয়ে থাকলেও মাঠের খেলাতে তা মোটেও প্রতিফলিত হয়নি। কিক অফের পরই আক্রমণে ওঠে স্বাগতিক দল। প্রতিপক্ষকে চেপে ধরেন সিরাত স্বপ্না-সানজিদা আক্তার-সাবিনা খাতুনরা। প্রথম মিনিটে স্বপ্নার কাট ব্যাকে সানজিদার শট আটকান গোলরক্ষক আজুরিন বিনতে মাজলান।
তৃতীয় মিনিটে গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করেন অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার সাবিনা। তবে মালয়েশিয়ার রক্ষণে চাপ ধরে রেখে নবম মিনিটেই গোল তুলে নেয় বাংলাদেশ। মারিয়া মান্দার কর্নারে গোলরক্ষক আজুরিন ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে গোলমুখ থেকে আলতো টোকায় বাকি কাজ সারেন। ১২ মিনিটে থ্রো ইনের পর প্রতিপক্ষের ভুল পাসে বল পেয়ে যান বক্সে ফাঁকায় থাকা সানজিদা। তাড়াহুড়ো করে ক্রসবারের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মেরে ব্যবধান দ্বিগুণের সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। ২৬ মিনিটে বাংলাদেশ ব্যবধান দ্বিগুণ করে। স্বপ্নার পাসে বক্সে ঢুকে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গোলরক্ষককে ডজ দিয়ে দূরের পোস্ট দিয়ে জালে জড়িয়ে দেন সাবিনা। ৪ মিনিট পর মালয়েশিয়াকে আরও চাপে ফেলে বাংলাদেশ। সাবিনার ক্রসে আঁখি গোলমুখ থেকে শুধু আলতো করে পা লাগিয়ে জালে বল পাঠিয়ে দেন।
তিন গোলে পিছিয়ে থেকে মালয়েশিয়া কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু গোল শোধ দিতে পারেনি। স্টেফি কৌরের ফ্রি-কিকে গোলরক্ষক রুপনা ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেনি। বল পেয়েও জাকিয়া বিনতে জুমিলিস শট ক্রস বারের ওপর দিয়ে মারেন।
তবে বিরতির আগে ৪৫ মিনিটেই বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় চলে আসে। মাশুরার লং পাস থেকে অফসাইড ফাঁদ ভেঙে সাবিনা আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান ফাঁকায় থাকা স্বপ্নাকে। এই ফরোয়ার্ডের লক্ষ্যভেদে স্কোরলাইন হয় ৪-০। যোগ করা সময়ে কৃষ্ণার শট পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়।
বিরতির পরও প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করে রাখে স্বাগতিক দল। তবে এই অর্ধে দুই গোলের বেশি আসেনি। ৬৬ মিনিটে আসে পঞ্চম গোল। বক্সের ভেতরে মনিকা চাকমার টানা দুবারের শট ব্লক হয়, তৃতীয় প্রচেষ্টায় ঠিকই নিঁশানা খুঁজে নেন এই মিডফিল্ডার। ৭৪ মিনিটে হয় ষষ্ঠ গোল। রিতুপর্ণা চাকমার ক্রসে কৃষ্ণা রানী সরকার হেডে দলকে বড় জয়ের দিকে নিয়ে যান।
আগামী ২৬ জুন এই দলটির বিপক্ষে দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচ খেলবে সাবিনারা।