ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভ’মিহীন ও গৃহহীনদের জন্য চতুর্থধাপে ত্রিশাল উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়নের রায়মনি গ্রামে নির্মিত হচ্ছে ১৩ টি ঘর। নিন্মমানের কাজের অভিযোগ তুলে গত মঙ্গলবার দুপুরে নির্মানাধীণ ঘর ভাংচুর করেন ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কদ্দুস মন্ডল।
জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে চতুর্থধাপে উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়নের রায়মনি গ্রামে ভ’মিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য নির্মিত হচ্ছে ১৩ টি ঘর। বারান্দাসহ দুই রুম বিশিষ্ট প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ অনুয়ায়ি ব্যয় হচ্ছে দুই লাখ ৮৯ হাজার টাকা। সেখানে দেয়া হবে বিদ্যুৎ ও পানি সুবিধা। গত ১৫ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছে নির্মাণকাজ, আগামি ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
গত মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ওই প্রকল্প এলাকায় যান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল কদ্দুস মন্ডল ও সংরক্ষিত এক নারী সদস্য সাবিনা আক্তার। এসময় ইউপি চেয়ারম্যান নির্মাণকাজের ইটের মান ভালনা ও সিমেন্ট কম দেয়া হচ্ছে বলে দাবি করে নির্মাণ শ্রমিকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। নিন্মমানের কাজ করতে দেয়া যাবেনা বলেই, ইউপি চেয়ারম্যান তার লোকজন দিয়ে নির্মানাধীণ ওইসব ঘরের লিন্টার, পিলার ও দেয়াল ভাংচুর করেন। চেয়ারম্যানের ভয়ে ঘন্টাখানেক সময় কাজ বন্ধ রাখেন শ্রমিকরা। চেয়ারম্যান চলে যাওয়ার পর কর্মরত শ্রমিকরা বিষয়টি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে অবগত করেন। চেয়ারম্যানের এমন কান্ডে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
ভাংচুরের ঘটনার খবর পেয়ে বিকেলে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় সরকার বিভাগ ময়মনসিংহের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম, জেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সানোয়ারুল হক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ’মি) হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শহিদুল্লাহ। এসময় পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য নির্মাণ সামগ্রী ময়মনসিংহ জেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ল্যাবে নিয়ে যান পরিদর্শনে আসা কর্মকর্তারা।
নির্মাণ শ্রমিক মোক্তার আকন্দ জানান, দুপুর ১২টার দিকে চেয়ারম্যান সাব আসেন কাজ দেখতে। এসেই তিনি আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। কাজ নিন্মমানের হচ্ছে দাবি করে তার লোকজন দিয়ে নির্মানাধীণ ওইসব ঘরের লিন্টার, পিলার ও দেয়াল ইউপি ভাংচুর করেন।
অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য স্থানীয় দেলোয়ার হোসেন ও আবদুল গফুর বলেন, কাজের মান ভালো। নিন্মমানের কাজের অভিযোগ তুলে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভ’মিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মানাধীন ঘর চেয়ারম্যানের ভাঙা ঠিক হয়নি।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কদ্দুস মন্ডল বলেন, আমার ইউনিয়নে ঘর নির্মান হচ্ছে অথচ আমি কিছুই জানিনা। আমি প্রকল্পের একজন সদস্য। প্রকল্প পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখি কাজ খুবই নিন্মমানের। হাত দিয়ে ধরলেই ডালাই ভেঙ্গে পড়ে। আমি শ্রমিকদের বলেছি তোমরা এভাবে নিন্মমানের কাজ করোনা। ভাংচুরের কোন ঘটনা ঘটেনি।
ইউএনও মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, মুজিববর্ষের ঘর নির্মাণকাজে আমরা ব্যাপক তদারকি করছি। উপজেলা প্রকৌশল ও পিআইও অফিসের দুজন ইঞ্জিনিয়ার সার্বক্ষনিক দায়িত্বে রয়েছে। নিন্মমানের কাজের প্রশ্নই আসেনা।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থলে এসে আমরা ভাংচুর পেয়েছি। তদন্ত করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।