শাহ্ আলম ভূঁইয়া, নিজস্ব প্রতিবেদক, নান্দাইল থেকে:
ময়মনসিংহের নান্দাইলে এখন সরিষা কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে পুরোদমে। উপজেলা জুড়ে ক্ষেত থেকে সরিষা কাটা, মাড়াই ও বাড়িতে নিয়ে রোদে শুকিয়ে বস্তাবন্দি করে বাজারে বিক্রির জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। কাঁচা সরিষা দানার সুবাসে কৃষকের মন যেন হারিয়ে যায়।
এবার সরিষার ভালো ফলন ও দাম পেয়ে কৃষকরদের মুখে ফুটে উঠেছে হাঁসির ঝিলিক।
সরেজমিনে উপজেলার বীরবেতাগৈর ইউনিয়নের বীরকামট খালী, চরবেতাগৈর ইউনিয়নের চরকামট খালী, চরউত্তরবন্দ,চরকোমরভাঙ্গা, খারুয়া ইউনিয়নের হাটশিরার চরাঞ্চলে ও কৃষকদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়,কৃষক ক্ষেত থেকে সরিষা কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এতে পরিবারের নারী-পুরুষ, শিশুসহ অন্য সদস্যরা আনন্দের সহিত দলবেঁধে সরিষা মাড়াই করছেন।
কৃষক-কৃষাণীরা জানান, সরিষার ভালো ফলন ও বাজারে ভালো দাম থাকায় তারা বেজায় খুশি। সরিষা চাষে তারা অনেক লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।
বর্তমানে স্থানীয় বাজারে প্রতিমণ সরিষা বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা দরে।
বীরকামট খালী গ্রামের কৃষক মাহতাব উদ্দিন বলেন,আমন ধান কাটার পর কৃষি অফিসের পরামর্শে ৩০ শতক(৩ কাঠা) জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। প্রতিমণ সরিষা ২ হাজার ৫শ টাকা দরে বিক্রি করেছি।
একই গ্রামের কৃষক আব্দুল করিম বলেন, “আমি ৩ কাঠা জমিতে সরিষার আবাদ করছি।ভালো ফলন হইছে। অহন ক্ষেত থেকে সরিসা তুলে বাড়িতে এনে মাড়াই করছি।আশা করছি লাভবান হইয়াম।”
চরকামট খালী গ্রামের কৃষক জুয়েল বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার ভালো ফলন ভালো হয়েছে। সরিষা কাটা শেষ করেছি। রোদে শুকিয়ে তা মাড়াই করবো।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ১৬৭ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি অর্জিত হয়ে ১৮০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।
বারি সরিষা ১৪.বারি সরিষা১৭,বিনা সরিষা ৯ এবং টরি-৭ জাতের সরিষা আবাদ করা হয়েছে। হেক্টরপ্রতি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ দশমিক ২৫ মেট্রিকটন।
উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার নাদিয়া ফেরদৌসি বলেন, ভোজ্য তেলের আমদানি কমাতে সরকার একটি মহাপরিকল্পনা নিয়েছে।সেই লক্ষ্যকে সামনে চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২ হাজার প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষককে সরিষার বীজ ও সার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।এতে সরিষার ব্যাপক আবাদ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, ইতিমধ্যে কৃষকরা সরিষা কাটা ও মাড়াই শুরু করেছে, ফলনও ভালো পাচ্ছে। আশা করছি বাজারে ভালো দামও পাবেন তারা।