সাহাবুদ্দিন চুপ্পু পরবর্তী রাষ্ট্রপতি

প্রকাশিত: ৭:৩২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩

স্বজন ডেস্ক : আওয়ামী লীগ মনোনীত মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুই হচ্ছেন দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি। তিনি রাষ্ট্রপতি পদে একমাত্র প্রার্থী হওয়ায় এখন আর ভোটের প্রয়োজন হচ্ছে না।

মো. আব্দুল হামিদের পর রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগ থেকে মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের মনোনয়নের ঘটনায় জাতীয় পার্টি ‘খুশি’ হলেও ‘নীরব বিরোধিতা’ করছে বিএনপি। রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি পদে মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিল করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

রাষ্ট্রপতি পদের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনীত মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ছাত্রলীগের সাবেক জেলা সভাপতি ছিলেন এবং পরে যুবলীগ করেছেন। কর্মজীবনে তিনি জেলা, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একজন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ইসলামী ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন।

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নের খবরে বিএনপিতে নীরব প্রতিক্রিয়া চলছে। দলটির স্থায়ী কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির উচ্চ পর্যায় থেকে এখনও এ বিষয়ে কোনও মতামত আসেনি। যে কারণে সিনিয়র নেতারাও প্রকাশ্যে মতামত দেওয়া থেকে বিরত রয়েছেন।

স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যের ভাষ্য— মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন দুদকের পরিচালক হিসেবে যোগদানের পরই বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট’-এর মামলাটি সামনে আনেন। ফলে, তার বিষয়ে ইতিবাচক অবস্থান থাকার কোনও সুযোগ নেই। এছাড়া আরেক সদস্যের ভাষ্য— এই বিষয়টি নিয়ে আসলে বিএনপির কোনও আগ্রহ নেই।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসাবে মো. সাহাবুদ্দিনকে মনোনয়ন প্রদান করেছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মাননীয় সভাপতি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি পার্টির প্রধান বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় শেখ হাসিনা এই মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছেন। তিনি পেশায় একজন আইনজীবী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য।

১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। তিনি ইতিপূর্বে জেলা ও দায়রা জজ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

মো. সাহাবুদ্দিন ১৯৭১ সালে পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান করেন এবং ১৯৯৫ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামাত জোটের নেতা কর্মীর দ্বারা সংঘটিত হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠন  এবং মানবতা বিরোধী কর্মকাণ্ডের অনুসন্ধানে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছাত্র জীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে সংঘটিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর কারা বরণ করেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের  সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে এক পুত্র সন্তানের পিতা এবং তার স্ত্রী প্রফেসর ড, রেবেকা সুলতানা সরকারের সাবেক যুগ্ম সচিব ছিলেন।

এদিকে সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ কমপ্লেক্সে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ থেকে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য এই পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সেই অনুযায়ী, তার ৫ বছরের মেয়াদ আগামী ২৩ এপ্রিল শেষ হবে।