স্বজন ডেক্স : সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২৪ অক্টোবর) এক শোকবার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক বিষয়ে ব্যারিস্টার রফিক-উল হক নানা পরামর্শ দিতেন।’
তিনি জানান, ২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাকে মিথ্যা মামলায় বন্দি করেন। সেই দুঃসময়ে ব্যারিস্টার রফিকুল হক তাকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে আইনি লড়াইয়ে এগিয়ে আসেন। শেখ হাসিনা গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে সে কথা স্মরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর আদ-দ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ এ আইনজীবী (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। আদ-দ্বীন হাসপাতালের মহাপরিচালক ডা. অধ্যাপক নাহিদ ইয়াসমিন তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রক্ত শূন্যতা ও প্রস্রাবের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত জটিলতা দেখা দেয়ায় গত শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মগবাজারের আদ-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
জানা গেছে, রক্তশূন্যতা, ইউরিন সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন প্রবীণ এই আইনজীবী। তিনি ডা. রিচমন্ড রোল্যান্ড গোমেজের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে একই বছরের ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা তথা অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। তিনি ছিলেন রাষ্ট্রের ষষ্ঠ প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল)।
১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৫৮ সালে এলএলবি পাস করেন। ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বার এট ল’ সম্পন্ন করেন। ১৯৬৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে এবং ১৯৭৩ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে আইন পেশা শুরু করেন তিনি। বর্ণাঢ্য জীবনে আইন পেশায় দীর্ঘ প্রায় ৬০ বছর পার করেছেন।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক বিভিন্ন সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাজ করেছেন। দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ও আইনি বিষয় নিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করেছেন বর্ষীয়ান এই আইনজীবী।