রফিক বিশ্বাস, তারাকান্দা( ময়মনসিংহ) থেকেঃ
প্রতিদিন ভোরে রোদ বৃষ্ট ঝড়ে দীর্ঘ ৪ যুগের বেশী সময় ধরে গ্রাহকের দরজা পত্রিকা বিলি করে চলছে হকারমোঃ সুলতানের (৬৫) জীবন যুদ্ধ। ময়মনসিংহ বীজের মোড় থেকে উপশহর শম্ভুগন্জ ও তারাকান্দা উপজেলার গাছতলা এবং কাশীগন্জ বাজারে শত শত পত্রিকা পাঠক ও গ্রাহকের পরিচিত একটি নাম হকার সুলতান। যার অপেক্ষা পাঠকও গ্রাহকরা চেয়ে থাকে সাইকেলে পত্রিকা নিয়ে আসছে হকার সুলতান।
সুলতানের দুুই পুত্র এইচ ওস সি পাশ করে বেকার জীবন যাপন করছে। এক মেয়ে এ বছর এসএসসি পাশ করেছে। অর্থাভাবে কলেজে ভর্তি করতে হিমসিম খাচ্ছে সুলতান। ৫ সদস্যের সংসারের ঘ্রানী টানতে সুলতানের পুরাতন বাইসাইকেলই ভরসা। হকার সুলতান মানবজমিনকে জানান,তার বাড়ি ফুলপুর উপজেলার কাজিয়াকান্দা গ্রামে।তার পিতার নাম জালাল উদ্দিন আহম্মেদ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তার পিতামাতা ময়মনসিংহ শহরে চলে আসে এবং ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস শুরু করে। এরই মাঝে তার বাবা মৃত্যৃবরন করেন। সংসারের হার ধরতে জীবনযুদ্ধে নামতে হয় সুলতানের।স্বশিক্ষা শিক্ষিত সুলতানের চোখে মুখে নেমে আসে অন্ধকার। কোন কুল কিনারা না পেয়ে সির্থান্ত নেয পত্রিকা বিক্রির।
তখন ময়মনসিংহ জেলার সংবাদপত্র এজেন্ট “বুক সেন্টােরের স্বত্বাধিকারী মোঃ আব্দস সালাম সাহেবের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বাকীতে পত্রিকা দেযার কথা বলেন এবং পরদিন মুল্য পরিষোধ করার শর্তে সুলতানকে দৈনিক সংবাদ,ইত্তেফাক, পৃর্বদেশ,দৈনিক বাংলা, দৈনিক আজাদ ও ইংরেজী দৈনিক মর্নিং নিউজ পত্রিকা দেন তখন পত্রিকা মূল্য ছিল ৩০ পয়সা। সময ছিল ১৯৭২ সাল। তখন থেকেই সুরতান হয়ে যান হকার সুলতান।
হকার সুলতান জানান,মহামারী করুনা কালে কোন প্রনোদনা আমার ভাগ্যে জুটেনি, একটি টিসিবি কার্ডও পাইনি। ৫০ বছরের পুরাতান বাইসাইকেল আমার নিত্য সঙ্গী। এ বিভাগীয় শহরে শত শত সাংবাদিকের চোখের সামনে পুরাতন সাইকেলে পত্রিকা নিয়ে বিলি করলেেও কারো চোখ পড়েনি হকার সুলতানের উপর। সুলতান আরো বলেন, সংবাদপত্র শিল্প টিকিয়ে রাখতে আমার মত হকারদের ভুমিকা থাকলেও হকারদের ভাগ্য পরিরর্তনে কেউ এগিয়ে আসেনি।