স্বজন প্রতিবেদক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে আটকের পর ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
সোমবার রাতে তাকে আটকের ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই মুচলেকায় থানা থেকে মুক্তি দেওয়া হয় তাকে। ধর্ষণ মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে ক্যাম্পাস থেকে ফেরার সময় পুলিশ তাকে আটক করেছিল।
রোববার রাতে নুর ও ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং ধর্ষণকারীকে সহযোগিতা ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মামলা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। রাজধানীর লালবাগ থানায় ওই মামলা করা হয়। মামলার বাদী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী।
নুর ও মামুন ছাড়াও ওই মামলায় অপর আসামিরা হলেন- ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ, যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সহসভাপতি নাজমুল হুদা এবং ঢাবি শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ হিল বাকি।
রাজধানীর মৎস্য ভবনের সামনে থেকে পুলিশ নুরুল হক নুরসহ ছাত্র অধিকার পরিষদের আরও কয়েকজন নেতাকে তুলে নিয়ে যায়। ১ ঘন্টা পর নুরকে মুছলেকায় ছেড়ে দেয় পুলিশ।
এদিকে, মামলার এজাহারে বাদী নিজেকে প্রধান আসামি মামুনের বান্ধবী পরিচয় দিয়েছেন। তার অভিযোগ, হাসান আল মামুন তার একই বিভাগের সিনিয়র ছাত্র এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের মাধ্যমে তার সঙ্গে পরিচয়। তারা মেসেঞ্জার, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে কথোপকথন চালিয়ে যান। একপর্যায়ে তার সঙ্গে মামুনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ৩ জানুয়ারি দুপুরে মামুন তাকে লালবাগের বাসায় ডেকে নেয়। তিনি বাসায় গেলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মামুন তাকে ধর্ষণ করে।
সাবেক ভিপি নুরসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে বাদী এজাহারে বলেছেন, ঘটনার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ১২ জানুয়ারি তাকে মামুন তার বন্ধু (২ নম্বর আসামি) সোহাগের মাধ্যমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তখন তিনি তার বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে সোহাগ বাধা দেয়। একপর্যায়ে তিনি যাতে হাসপাতালে থাকতে না পারেন, সে জন্য নানা অপচেষ্টা চালান। এর মধ্যে তিনি এক নম্বর আসামি মামুনকে বিয়ের চাপ দিলে সে বিয়ে করতে সম্মত হলেও পরে টালবাহানা শুরু করে।
বাদী বলেন, কোনো উপায় না দেখে গত ২০ জুন বিষয়টি নুরুল হক নুরকে (৩ নম্বর আসামি) মৌখিকভাবে জানালে তিনি বিষয়টির সুরাহা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। নুর তাকে নীলক্ষেতে দেখা করতে বলেন। সেখানে গেলে মীমাংসার কথা এড়িয়ে তাকে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে হুমকি দেন। এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে নুর তার ভক্তদের দিয়ে উল্টাপাল্টা পোস্ট দেওয়াবেন বলেও হুমকি দেন। তাকে (বাদীকে) পতিতা বলে ছাত্র অধিকার পরিষদের লাখ লাখ মেম্বারের গ্রুপে প্রচার চালানোরও হুমকি দেন। তার একটি লাইভে সব সম্মান চলে যাবে বলেও তাকে শাসান। মামলার ৪ নম্বর আসামি সাইফুল তার (বাদী) নামে কুৎসা রটাতে ৫ নম্বর আসামি নাজমুল ও ৬ নম্বর আসামি আব্দুল্লাহ হিল বাকিকে দায়িত্ব দেয়। তারা মেসেঞ্জার গ্রুপে তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে মানসিকভাবে চাপ দিতে থাকে।
লালবাগ থানার ওসি জানিয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ, এতে সহায়তা ও হুমকি প্রদানের অভিযোগে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। অভিযোগটি তদন্ত করা হচ্ছে।