ফুলপুর প্রতিনিধি :‘‘আমার মৃত্যুর জন্য রনি দায়ী। সে আমাকে স্ত্রীর মতো ব্যবহার করছে’’ এমনি চিরকুট লিখে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে মিনারা আক্তার (১৫)। সে স্থানীয় লাউটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী। তারাকান্দা থানায় দায়েরকৃত চাঞ্চল্যকর মামলা বেরিয়ে এসেছে ইউপি সদস্যসহ এলাকার মাতাব্বরদের গাফিলতির এক ভয়াবহ চিত্র।
জানা যায়, ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার বানিহালা ইউনিয়নের নলদিঘী গ্রামের মকবুল হোসেনের স্কুল পড়ুয়া কন্যা মিনারা আক্তার (১৫) এর সাথে পার্শ্ববর্তী গালাগাও ইউনিয়নের বালিজানা গ্রামের মোঃ রফিকুল ইসলামের পুত্র রাকিব হাসান রনি (২০) এর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
১৫ মে শনিবার রাত সাড়ে ৮ ঘটিকায় প্রেমিক রনি গোপনে প্রেমিকা মিনারার সাথে দেখা করতে এসে বাড়ির লোকজনের হাতে ধরা পড়ে। খবর পেয়ে গালাগাও ইউপি’র ১নং ওয়ার্ডের সদস্য বালিজানা গ্রামের মজিবর রহমানের নেতৃত্বে প্রেমিক রনির লোকজন মিনারার বাড়িতে আসে এবং বিভিন্ন অপবাদ ও গালা-গালি করে রনিকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়ে নিজেরা গভীর রাত পর্যন্ত অমিমাংষিত গ্রাম্য শালিশ চালায়। এক পর্যায়ে মিনারা আক্তার পলাতক প্রেমিকের বাড়ীতে বিয়ের দাবীতে অবস্থান করে। পরবর্তীতে উক্ত মজিবর মেম্বার কতক সঙ্গীসহ স্কুল ছাত্রী মিনারাকে তার পিত্রালয়ে ফিরিয়ে দেয়।
মিনারা আক্তারের বড় ভাই রেজাউল জানান, পরদিন রবিবার ভোর রাতে মিনারা আক্তার প্রেমিক রনির বাড়ীতে আবারো যায় এবং সেখানেই বিষপান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারপর ইউপি সদস্য মজিবর এর হুকুমে তার লোকজন মিনারাকে তারাকান্দা-ধোবাউড়া সড়কের পাশে বালিজানা নয়াপড়া ব্রীজের নিচে রেখে যায়। স্থানীয় লোকজন মিনারাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করে।
অসুস্থ মিনারাকে বহনকৃত ভ্যান চালক রফিকুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে ভর্তি করার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মিনারাকে মৃত ঘোষণা করে। ময়মনসিংহ কোতুয়ালী মডেল থানা পুলিশ সুরতহাল রির্পোট তৈরির সময় মিনারার পরনের পায়জামায় লুকানো একটি চিরকুট উদ্ধার করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সোমবার বেলা পৌনে ৩ টা) মিনারার লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে আছে।
তারাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল খায়ের জানান, এ ব্যাপারে তারাকান্দা থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামী গ্রেপ্তারে পুলিশি তৎপরতা চলছে।