দশ বছর পর উপজেলা বিএনপির পকেট কমিটি ঘোষনা বিক্ষুব্দ নেতাকর্মীদের ঝাঁড়– মিছিল
ত্রিশালে বিএনপির একক আধিপত্যে ডা. লিটন
ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
ঝিমিয়ে ছিল বিএনপির দলীয় কার্যক্রম। দীর্ঘ দশ বছর পর রোববার রাতে জেলা বিএনপি ঘোষনা করে ৩৯ সদস্য বিশিষ্ট ত্রিশাল উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি।
সাবেক উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির বর্তমান আহবায়ক ডা. লিটনের পকেট কমিটিতে নেই দলের দুঃসময়ে জেলজুলুমের শিকার ত্যাগী নেতাকর্মীরা। বিতর্কিত কমিটির বিপক্ষে অবস্থানকারীরা জানিয়েছেন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া। সোমবার বিকেলে বিক্ষুব্দ নেতাকর্মীরা ত্রিশাল পৌরশহরে ঝাঁড়– মিছিল ও ডা. লিটনের ছবিতে অগ্নিসংযোগ করে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৪ সালে ঘোষিত ত্রিশাল উপজেলার বিএনপির আহবায়ক হয়ে ত্রিশালে আসেন ঢাকা মেডিকেলের সাবেক ছাত্রনেতা ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন। এরপর থেকে ওই কমিটির দাপটে আহবায়ক তার ক্ষমতার অপ-ব্যবহারের মাধ্যমে দলীয় কার্যক্রমকে নিক্রিয় করে একক আধিপত্যের রাজনীতিতে জড়িয়ে বঞ্চিত করেন উপজেলার প্রায় সকল ত্যাগী নেতাকর্মীদের।
ছয় বছর আহবায়কের দায়িত্ব পালনকালে কৌশলগত কারনে পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করেননি তিনি। সরকার পরিবর্তনের পর ২০১০ সালে ওই আহবায়ক কমিটি পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করলেও বিগত আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে দেখা যায়নি লিটনকে। ২০১৭ সালে ময়মনসিংহ দক্ষিন জেলা বিএনটির কমিটিতে আহবায়ক হন ডা. লিটন। তারপর উপজেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা হয়। তার দুই বছর পর রোববার রাতে জেলা বিএনপির আহবায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন, যুগ্ম আহবায়ক-১ মোঃ জাকির হোসেন বাবলু ও যুগ্ম আহবায়ক-২ আলমগীর মাহমুদ স্বাক্ষরিত এনামুল হক ভূইয়াকে আহবায়ক করে ৩৯ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা বিএনপির কমিটি ও গোলাম রব্বানী বাদলকে আহবায়ক করে ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট পৌর কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন অনেক প্রবীণ, ত্যাগী ও তুখোর নেতারা। বিতর্কিত ওই কমিটি ঘোষনা করায় নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিএনপির দুঃসময়ে দায়িত্বপালনকারী ও প্রতিষ্ঠালগ্নে যারা দলের জন্য কাজ করেছেন দলের এমন একাধিক সিনিয়র নেতার দাবী, ডা. লিটন তার নিজের পকেট কমিটি করেছেন। সোমবার বিকেলে ত্রিশাল পৌরশহরে বিক্ষুব্দ নেতাকর্মীরা ঝাঁড়– মিছিল ও ডা. লিটনের ছবিতে অগ্নিসংযোগ করে।
দলের প্রবীণ নেতারা জানান, ডা. লিটনকে থানা বিএনপির আহবায়ক করার পর থেকেই তার সেচ্ছাতারিতায় দলটি সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে এবং দলের এমন দুর্দিন নেতাকর্মীরা তার সময়ের বিগত দুই দশকেও দেখেনি। বিতর্কিত নবগঠিত কমিটিতে পদবঞ্চিত হয়েছেন দুইবার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, সাবেক ছাত্র ও যুবনেতা, শৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ছাত্র ঐক্য পরিষদের যুগ্ন-আহবায়ক, থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিনিয়র যুগ্ন-আহবায়ক জাহিদ আমিন। যিনি এক এগারোতে কারাভোগ একাধিকবারের কারা নির্যাতিত নেতা।
কমিটি বাতিল করে ত্যাগি নেতাদের স্থান করে দেওয়ারও আহবান জানান। নেতারা আরো জানান, সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মুনসুর আহমেদ এবং আবদুল খালেক এমপি’র পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও পদবঞ্চিত বিএনপির নেতারা হচ্ছেন, ইউনিয়ন পর্যায়ের সাবেক সভাপতি আজহারুল ফয়েজ মুঞ্জু, জামাল উদ্দিন, আইউব আলী খান, বাহার উদ্দিন মাষ্টার, বইলর ইউনিয়নের সভাপতি আতাউর রহমান, রামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাজমুল হক, উপজেলা যুবদলের সাবেক আহবায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার শাহজাহান কবীর সহ অনেকেই।
জাহিদ আমিন বলেন, একক আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে ডা. লিটনের এই পকেট কমিটি গঠন করেছেন।