ধোবাউড়ায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় দশ পরিবার চলাচলে ভরসা বাঁশের সাকু

প্রকাশিত: ৮:১০ অপরাহ্ণ, জুন ১৮, ২০২১

ধোবাউড়া (ময়মনসিংহ)প্রতিনিধি :
ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পানিবন্দী অবস্থায় মানবেতর জীবন-যাপন করছে প্রায় দশটিরও অধিক পরিবার। উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাসপাতাল মোড়ে উত্তর-পশ্চিম অংশে অবস্থিত বসতবাড়িগুলোতে অল্প বৃষ্টিতেই পানি উঠে।

পানি চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার কারণে বসতর, রান্নাঘর তলিয়ে পরিবার পরিজনদের নিয়ে শুকনো খাবার খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। সন্ধ্যা হলেই ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে থাকতে হয় সাপ আতংকে। রাতে ঘরে উঠে বিভিন্ন প্রজাতির বিষাক্ত সাপ। কিন্তু দেখার যেন কেউই নেই।

এছাড়াও হাসপাতাল মোড় থেকে ঘোষগাওগামী রাস্তাটির উপরও পানি জমে থাকে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধোবাউড়া-ঘোষগাঁও এল জি ই ডি রাস্তায় পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি সরকারী রিং কালভার্ট অকেজো হয়ে আছে। স্থানীয়রা জানান, আব্দুর রশিদের বাড়ির সামনে পানি চলাচলের জন্য আরেকটি রিং দেওয়া ছিল। সম্প্রতি তিনি মাটি ভরাট করে পানি চলাচলের রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুর রশিদ বলেন, ‘পূর্বে মোতালেব প্রফেসরের বাসার দিকে পানি চলাচলের ড্রেন ছিল। তিনি ড্রেনটি বন্ধ করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করেন। পরে আমার জায়গা দিয়ে একটি রিং দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বাড়ি করার জন্য আমি এখানে মাটি ভরাট করেছি। আঃ রশিদ আরও বলেন, পানিতে তলিয়ে যাওয়া আমার পুকুরের প্রায় এক লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে।’

ধোবাউড়া ডিগ্রী কলেজের সাবেক শিক্ষক আঃ মোতালেব বলেন, অতীতে আমার বাসার পাশ দিয়ে পানি চলাচলের জন্য একটি ড্রেন ছিলো, আমার নতুন বাসা নির্মাণ করার সময় ড্রেনটি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে আঃ রশিদের বাড়ির পাশ দিয়ে পানি চলাচলের জন্য ‘ইউনিয়ন পরিষদের প থেকে তৎকালীন ইউপি সদস্য আবেদ আলী এখানে একটি রিং দিয়েছিলেন।

সম্প্রতি আঃ রশিদ মাটি ভরে রিংটি বন্ধ করে দিয়েছেন। এনিয়ে পানি বন্দি আবুল কালাম বলেন, সারা উপজেলায় যেখানে পানি বন্দির কোন চিত্র নেই অথচ উপজেলা সদরে আমাদের সাকু দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ছোট্ট বাচ্চা ও আমার গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে একদিকে নোংরা পানির কারণে রয়েছি রোগ আতংকে অপরদিকে রয়েছি বিষাক্ত সাপ আতংকে। রান্নাঘরে পানি উঠায় প্রায় বিশদিন যাবৎ অন্যের বাড়ি থেকে রান্না করে এনে খাবার খাচ্ছি এবং বেশিরভাগ সময় আমাদের শোকনা খাবার খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে পানি বন্দি আঃ বারেক বলেন, নির্বাচনের সময় চেয়ারম্যান মেম্বাররা আমাদের বাড়িতে আইসা ভোটের লাইগ্গা আমাদের পাশে থাকবো কয়! অহন আমরার ঘর পানি! রাইন্ধ্যা খাইতারতাছিনা অহন কেউ দেহে না। আঃ বারেকের মতো পানি বন্দি পারিবারগুলো জনপ্রতিনিধিদের উপর চাপা ক্ষোভ প্রকাশ দ্রুত পানি নিষ্কাসনের দাবী জানিয়েছেন। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাফিকুজ্জামান বলেন, পানিনিস্কানের জন্য দ্রুত প্রয়োজন পদপে গ্রহণ করা হবে।