ঢাকার আফতাব নগরে শেরপুরের সুলতান : চড়া দামে বিক্রির ইচ্ছা

প্রকাশিত: ৮:২১ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৫, ২০২১

এম উজ্জ্বল: নালিতাবাড়ী, শেরপুর :
সুলতান, যার মাঝেই খুঁজে ফিরি নামের অর্থ। লম্বায় ১০ ফুট আর উচ্চতায় ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি সুলতান নামের ভিতরেই যেন রাজকীয় একটা ভাব রয়েছে। ৪২ মন ওজনের ‘‘ষাঁড়’’ সুলতান হয়ে উঠেছে শেরপুর জেলার অন্যতম আকর্ষণ। প্রতিবছর কোরবানীর ঈদ সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ওজন এবং দামে আলোচনায় উঠে আসে বাহারি নামের গরু। এবার সেই তালিকায় উঠে এসেছে নালিতাবাড়ীর সুলতান। শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার খামারি রুহুল আমীন। গত সাড়ে তিন বছর ধরে খুব যত্ন নিয়ে একটি ষাঁড় বাছুরের লালন পালন করছে তিনি। আদর করে নাম রেখেছে সুলতান।

খামারি রুহুল আমীন পেশায় একজন পল্লী চিকিৎসক। দুটি অস্ট্রেলিয়ান গাভী দিয়ে খামার শুরু করেছিলেন তিনি। সেই খামারে থাকা একটি গাভী সাড়ে তিন বছর আগে ষাঁড় বাছুরের জন্ম দেয়। বাছুরটি আস্তে আস্তে দীর্ঘদেহী লক্ষনে দেখা দেয়। বিশাল দেহী সেই বাছুরের নাম রাখেন সুলতান।

 

dav

খামারি রুহুল আমিন জানান, সুলতানের বর্তমান ওজন প্রায় ৪২ মণ। বর্তমানে সুলতান বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ও ওজনের ষাঁড় বলে দাবি করেন তিনি। গত বছর করোনার কারণে সুলতানকে বাজারে তুলতে পারেনি। তাই খামারে এসেই অনেকে দরদাম করেছে। সে সময় সর্বোচ্চ দাম বলা হয়েছিল ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু খামারী দাম হাঁকিয়েছিলেন ১৫ লাখ। তাই দাম পছন্দমতো না হওয়ায় সুলতানকে বিক্রি করেননি তিনি। তিনি আরো বলেন, এক বছরে সুলতানের অনেক ওজন বেড়েছে। তাই এবার দামও বেড়ে গেছে। সুলতানের বর্তমান ওজন প্রায় ১ হাজার ৭০০ কেজি বা ৪২ মণ।

এবারের কোরবানির ঈদে এর দাম ২০ লাখ টাকা হাঁকান তিনি। রুহুল আমীন বলেন, সুলতানকে খামার থেকে বের করতে কমপে ৫ থেকে ৬ জন লোক প্রয়োজন হয়। তাই সচরাচর তাকে বের করা হয়না। শেরপুরে এই দামের গরুর ক্রেতা খুব একটা নেই। তাই সুলতানকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। আজ ১৫ জুলাই ট্রাকে করে ঢাকা আফতাব নগরে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন খামারি রুহুল আমিন।

এদিকে সুলতানকে নিয়ে গ্রামের পাশাপাশি জেলার অনেকেরই রয়েছে কৌতূহল। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে বিশাল আকৃতির সুলতানকে দেখতে আসেন অনেকেই। ঢাকায় নেওয়ার শেষ দিনেও ষাঁড় দেখতে উৎসুক জনতার ভীর দেখা যায়। কেউ গরুর সাথে সেলফি তুলে স্মৃতিতে রাখতে ব্যস্ত। সুলতানকে দেখতে আসা ওয়াহিদুল বলেন, শেরপুর জেলায় সচরাচর এমন বড় ষাঁড় এর আগে আমি দেখিনি। এলাকায় কয়েকজনের কাছে সুলতানের নাম শুনে দেখতে এসেছি। এত বড় ষাঁড় দেখে সত্যিই অবাক হয়েছি।

খামারি রুহুল আমিন বলেন, আপনাদের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের সকল বৃত্তশালী, শিল্পপতিদের নিকট আবেদন করছি, আপনারা আমাদের দেশীয় খামারে উৎপাদিত গরু ক্রয় করুন এবং দেশের খামারীদের পাশে দাড়াঁন। বিদেশি গরু ক্রয় না করে আমাদের দেশে উৎপাদিত পশু ক্রয় করলে আমাদের খামার চালাতে আগ্রহ পাব। অন্যথায় যাদের আগ্রহ আছে তারাও খামার থেকে পশু পালনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।