‘সভ্য মানুষের জন্য-সমাজ’ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে ডা. আখলাকুল হোসাইন আহমেদ স্মৃতি গ্রন্থাগার‘র শুভ উদ্বোধন
মো. আবুল কালাম আজাদ
‘সমাজ’ শব্দটির বিশ্লেষণ তথা ‘স’ ‘মা’ ‘জ’ এই তিন বর্ণের মর্মার্থ এই যে, ‘সুন্দর মানুষের জন্য’-সমাজ, ‘সভ্য মানুষের জন্য’-সমাজ, ‘সত্যনিষ্ঠ মানুষের জন্য’-সমাজ, ‘সুশিক্ষিত মানুষের জন্য’-সমাজ, ‘সুশৃঙ্খল মানুষের জন্য’-সমাজ ।
শুধুর তাই নয় সমাজ শব্দের আরও আরও বস্তুনিষ্ঠ তাৎপর্যের কথা জ্ঞানীদের বর্ণনায় উঠে এসেছে। অন্যদিকে কোন প্রজন্মকে দীর্ঘ মেয়াদে সমৃদ্ধ করতে চাইলে তাদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে সত্যিকার মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে ছেড়ে দাও। সমাজ-দেশ-রাষ্ট্র আপন আলোয় দীপ্তি ছড়াবে সর্বত্র।
এমনিই এক সভ্য-সুন্দর-সুশিক্ষিত আর আলোকিত সমাজ বিনির্মাণের স্বপ্ন হৃদয়ে ধারণ করে হাওর পাড়ের জনমানুষের মানবিক অভিভাবক সাজ্জাদুল হাসান তাঁর বাবা তথা কীর্তিমান ব্যক্তিত্ব ডা. আখলাকুল আহমেদ এর স্বপ্ন পূরণ করবার মানসে প্রতিষ্ঠা করেন শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়। রবিবার এই মহাবিদ্যালয়ে তথা নেত্রকোনা‘র প্রত্যন্ত জনপদ আদর্শ নগরের আলোকচ্ছটা খ্যাত শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ে ডা. আখলাকুল হোসাইন আহমেদ স্মৃতি গ্রন্থাগারের যাত্রা শুরু হয়েছে।
জুম এপসের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে গ্রন্থাগারের শুভ উদ্বোধন ও ফলক উন্মোচন করেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত কবি নেত্রকোনার কৃতি সন্তান স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদক প্রাপ্ত কবি নির্মলেন্দু গুণ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান এবং শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব ও বিমান বাংলাদেশের চেয়ারম্যান হাওর জনপদের আলোক বর্তিকা সাজ্জাদুল হাসান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি ও নেত্রকোনা জেলার জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব ও বিমান বাংলাদেশের চেয়ারম্যান হাওর জনপদের আলোক বর্তিকা সাজ্জাদুল হাসান‘র পিতা মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, গণপরিষদ সদস্য ডা.আখলাকুল হোসাইন আহমেদ‘র স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গ্রন্থাগারের শুভ সূচনা হয়েছে।
ভার্চুয়ালি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও যুক্ত ছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান, নেত্রকোনা জেলায় বিভিন্ন সময়ে কর্মরত জেলা প্রশাসকবৃন্দ, নেত্রকোনা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা সদরের পৌর মেয়র, মোহনগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পৌর মেয়ার লতিফুর রহমান রতন, উপজেলা মহিলালীগের সভাপতি, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবু দিলীপ দত্ত, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর্জা আব্দুল গনি, মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, মোহনগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোস্তফা কামাল জিয়া সহ ৬ নং সুয়াইর ইউনিয়নের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এবং সমাজের বিভিন্ন শ্রেনিপেশার ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থেকে তাদের জ্ঞানগর্ব অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
উদ্বোধক কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেন, গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে এটিকে অধ্যয়নের কেন্দ্র হিসেবে পরিনত করতে হবে। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী উভয়েই এটিকে ব্যবহার করছে কি-না সেটি মনিটর করার ব্যবস্থা থাকতে হবে, তাহলেই কেবল এইটি প্রতিষ্ঠা করার সুফল নিশ্চিত হবে।
বক্তারা বলেন, নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার হাওর পাড়ে আলোকের দীপ্ত শিখা জ্বালিয়ে সাজ্জাদুল হাসান যে নজির স্থাপন করেছেন তা দেশের ইতিহাসে সত্যিই বিরল।