এম উজ্জ্বল, নালিতাবাড়ী, শেরপুর:
বাংলাদেশে কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন ও শস্য নিবিড়তা বৃদ্ধির জন্য বৃহত্তর ময়মনসিংহ একটি সমৃদ্ধ অঞ্চল । ভূ-প্রকৃতি অনুসারে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের কৃষি অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বেশ বৈচিত্র্যময়।
এই অঞ্চলে রয়েছে পাহাড়, হাওর, চর ও সমতল ভূমি যেখানে প্রায় ৬১%ভাগ জমি দুই ফসলের উপযোগী। শেরপুরের নালিতাবাড়ী কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ অঞ্চলে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধির ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। আর এই সুযোগকে মসৃণ করতে বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি করণ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
জানা গেছে, প্রকল্পটি বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ৬টি জেলার মোট ৬০টি উপজেলায় ইতিমধ্যে বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এই প্রকল্পের আওতায় শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার শস্য নিবিড়তা বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন ইউনিয়নে কৃষক গ্রুপ গঠন, বিভিন্ন ফসলের প্রদর্শনী স্থাপন, নন-গ্রুপ, কৃষক প্রশিক্ষণ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী প্রশিক্ষণ, মাঠ দিবস আয়োজন সহ প্রকল্পের আওতাধীন অন্যান্য কাজ করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, নালিতাবাড়ী, শেরপুর।
বুধবার নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের পানিহাতা গ্রামে আয়োজিত হয় দুইটি কৃষক গ্রুপ গঠন অনুষ্ঠান। আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার জনাব মো: আলমগীর কবির, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার জনাব মোঃ ওয়াসিফ রহমান ও মওদুদ আহমেদ, সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
এসময় অতিথি গণের উপস্থিতিতে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নে ২ টি কৃষক গ্রুপ গঠন করা হয়।
এসময় অতিথি গণ ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি করণে গ্রুপ গঠনের প্রয়োজনীয়তা, ঐক্যবদ্ধভাবে কাজের গুরুত্ব, গ্রুপের পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে দিক নির্দেশনা, নিবিড়তা বৃদ্ধি করণে বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। প্রকল্পটি সফলভাবে সম্পন্ন হলে শস্য নিবিড়তা ২০৪% থেকে ২১০% -এ বৃদ্ধি পাবে, কৃষি উৎপাদন ও উৎপাদন শীলতা বৃদ্ধি পাবে, কৃষকের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে।
মরিচপুরান ইউনিয়নে উক্ত প্রকল্পের আওতায় স্থাপিত মরিচ প্রদর্শনী কৃষক জনাব আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এই প্রকল্পের সহায়তায় আমি আমার পতিত জমিতে মরিচ চাষ করে লাভবান হয়েছি এবং মাঠের অবস্থা দেখে আশা করছি প্রায় ৬ মণ মরিচ বিক্রয় করতে পারবো। মরিচ উত্তোলন করে আমি এই প্রকল্পের আওতায় আমন ধান চাষ করবো।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার জনাব মো: আলমগীর কবীর দৈনিক গণকন্ঠকে বলেন, নালিতাবাড়ী উপজেলার শস্য নিবিড়তা বৃদ্ধি করতে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি করণ প্রকল্পের কাজ নিবিড়ভাবে সম্পাদন করা হচ্ছে।
এ প্রকল্পের আওতায় আউশ, আমন, বোরো ধান, পাট, আদা, হলুদ, পিয়াজ, বসত বাড়িতে সবজি পুষ্টি বাগান, একক ও মিশ্র ফল বাগান, ডাল জাতীয় ফসল, কন্দাল ফসল, মসলা জাতীয় ফসল আবাদের সুযোগ আছে। ইতিমধ্যে এসব ফসলের প্রদর্শনীও স্থাপন করা হয়েছে। এসব ফসল চাষের মাধ্যমে শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধি পাবে, পতিত জমি চাষের আওতায় আসবে এবং সর্বোপরি কৃষকদের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে।