গফরগাঁও(ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা :
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার চাকুয়া গ্রামে টাকা-পয়সা নিয়ে ঝগড়ার জের ধরে প্রবাসী ছেলে শারফুল ঢালীকে পিটিয়ে খুন করার ঘটনায় ‘ঘাতক’ পিতা ইসহাক ঢালীকে গ্রেফতার করেছে পাগলা থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে গাজিপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ছেলে হত্রা মামলার প্রধান আসামী পিতা ইসহাক ঢালীকে গ্রেফতার করে পাগলা থানা পুলিশ।
ইসহাক ঢালী পুলিশের জিঙ্গাসাবাদে ছেলেকে খুনের দায় স্বীকার করেছে বলে পাগলা থানার ওসি মোঃ রাশেদুজ্জামান শুক্রবার (২৭ আগষ্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন মামলা দায়েরে ৬ ঘন্টার মধ্যে হত্যা মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়েছে থানা পুলিশ। অতি দ্রুত এ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দেয়াও হবে তিনি জানান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়,উপজেলার চাকুয়া গ্রামের ইসহাক ঢালীর (৫৮) ছেলে শারফুল দীর্ঘ ৮ বছর লেবাননে প্রবাসী ছিলে । সেখানে ভালো বেতনে চাকুরী করতো । গত ছয় মাস পূর্বে সে দেশে ফিরে আসে। প্রবাসে কর্মরত অবস্থায় আয়-রোজগারের সমস্ত টাকা সে তার পিতার নামে দেশে পাঠিয়ে দিতো। দেশে ফেরত আসার পর তার পিতা তাকে কোন টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় । এমনকি হাতখরচের টাকাও শারফুল ঢালী তার পিতার কাছে চেয়ে পেতো না। এ নিয়ে পিতা পুত্রের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ হতো।
বুধবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে টাকা-পয়সা নিয়ে ঝগড়ার একপযার্েেয পিতা ইসহাক ঢালী ও ছোট ভাই আশরাফুল ঢালী(২৮) লোহার রড ও শাবল দিয়ে শারফুল ঢালীর মাথা. পা ও বুকে এলাপাথারী পিটিয়ে গুরুতর জখম করে প্রায় অর্ধমৃত অবস্থায় বসতঘরের একটি রুমে তালাবন্ধ করে রাখে
। শারফুল ঢালীকে মারার সময় তার চিৎকারে নিহত শারফুল ঢালীর চাচা-চাচীসহ এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করতে গেলে ইসহাক ঢালী ও আশরাফুল ঢালী রড, শাবল ও রামদা দিয়ে এলাকাবাসীকে তাড়া দেয়।
দীর্ঘক্ষন আহত শারফুল ঢালীর সাড়াশব্দ না পেয়ে তার চাচা নুলুল ইসলাম ঢালী (৫৬). মোঃ ইসমাইল ঢালী, চাচী নাছিমা খাতুন (৪৬) স্থানীয় ইউপি (নিগুয়ারি) চেয়ারম্যান শেখ শাহাবুদ্দিনকে ঘটনাটি জানায়। ইউপি চেয়ারম্যান শেখ শাহাবুদ্দিন স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে শারফুল ঢালীকে তাদের বাড়ি থেকে মূমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
২৪ ঘন্টা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে শারফুল ঢালী চিকিৎসাধীন অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরন করে।
পরে এ ঘটনায় নিহতের ছোট বোন শেফালী আক্তার পাগলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় আসামী করা হয় নিহতের ইসহাক ঢালী ও ভাই আশরাফুল ঢালী।