ধোবাউড়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় ঘোষগাঁও ইউনিয়নে বন্যার প্রকোপ তেমন না থাকলেও ভারত থেকে বয়ে আসা পাহাড়ী নিতাই নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে নির্মিত প্রায় এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
জিগাতলা গ্রামে নিতাই নদী পাড়ের দেড়শতাধিক পরিবারের মাঝে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতিতে গত বন্যায় নিতাই নদীতে অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধি আর তীব্র স্রোতে বেড়িবাঁধ ভেঙে বন্যায় প্লাবিত হয় উপজেলার চার ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম।
ক্ষতিগ্রস্থ হয় ঘরবাড়িসহ ফসলী জমি। ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ নির্মাণ না করায় ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টি হলেই নিতাই নদীতে পানি বৃদ্ধি হয়ে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে উপজেলার ঘোষগাঁও, ধোবাউড়া, গামারীতলা, পোড়াকান্দুলিয়াতে দেখা দেয় অকাল বন্যা।
আর এই অকাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া থেকে উপজেলা সাধারন মানুষদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে ঘোষগাঁও ইউনিয়নে গত বন্যায় ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান ডেভিড রানা চিসিম। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বহীনতায় ঘোষগাঁও ইউনিয়নের একাংশে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে পূননির্মান কাজ চলমান থাকলেও ভাঙন দেখা দিয়েছে অপরাংশের জিগাতলা গ্রামে।
ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বেড়িবাঁধ ভাঙন। বেড়িবাঁধ ভেঙে অকাল বন্যায় বাড়িঘরসহ নব্য রোপিত জমির ফসল ক্ষতি হওয়ার আংশকায় আতংকে দিন পার করছে জিগাতলা গ্রামে নদী পাড়ের প্রায় দেড়শতাধিক পরিবার। কিন্তু নজরে আসছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের। স্থানীয় এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, গত দুই বছর পূর্বে নিম্নমানের বালু সিমেন্ট দিয়ে স্লাব বানিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মান করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
কিন্তু বছর না যেতেই বেশ কয়েক জায়গাতে দেখা দেয় ভয়াবহ ভাঙন। যার ফলে বন্যায় প্লাবিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয় উপজেলার ঘোষগাঁও, ধোবাউড়া, গামারীতলা, পোড়াকান্দুলিয়াসহ চার ইউনিয়নের মানুষ। যে কোন সময় এই বেড়িবাঁধ ভেঙে আবারও পানির তীব্র স্রোতে বিলীন হয়ে যেতে পারে জিগাতলা গ্রামের প্রায় দেড়শতাধিক পরিবারসহ উপজেলার চারটি ইউনিয়ন।
এনিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে জিগাতলা গ্রামের ইউপি সদস্য আলাল উদ্দিন বলেন, বেড়িবাঁধ ভাঙনের ভয়ে রাতে আমাদের ঘুম হয় না। নিতাই নদীর তীব্র স্রোতে ভাঙনের ভয়ে ঘর-বাড়ি বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় ছেলে-মেয়ে নিয়ে বৃষ্টি হলেই আমরা আতংকে রাত জেগে থাকি।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে মুটোফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ ব্যপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডেভিড রানা চিসিম বলেন, গত বন্যায় ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ নির্মানের লক্ষে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে কয়েকবার জানানোর পরও কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায়, এলাকার সাধারণ কৃষকদের নব্য রোপিত জমির ফসল রক্ষার্থে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ পূননির্মাণ কাজ ইতিমধ্যে চলমান রয়েছে এবং জিগাতলা গ্রামে দ্রুত বেড়িবাঁধ পুননির্মানের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে আবারও যোগাযোগ করার চেষ্টা করতেছি।