শাহ্ আলম ভূঁইয়া, প্রধান প্রতিবেদক, নান্দাইল আঞ্চলিক অফিস :
ময়মনসিংহের নান্দাইলে বসবাসরত এক প্রতিবন্ধী যুবকের দাবিদার দুই পরিবার। এ নিয়ে নান্দাইল উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের হাসেনপুর গ্রামে আবুল কালামের পরিবারের দাবি ওই যুবক তাদের সন্তান। তার নাম মিলন মিয়া। অপরদিকে, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তাড়াবো পৌরসভার দক্ষিণ রুপসী এলাকার কাজী অরুণের পরিবারের দাবি ওই প্রতিবন্ধী যুবক মিলন নয়, সে তাদের হারিয়ে যাওয়া সন্তান কাজী আলভী। যুবকটির বর্তমান বযস ২১ বছর।
জানা যায়, নান্দাইলের পাঁচরুখি গ্রামের জনৈক সোহাগ মিয়া সম্প্রতি ওই প্রতিবন্ধী যুবককে নিয়ে একটি টিকটক ভিডিও তৈরি করে তার আইডিতে পোষ্ট করেন।
ভিডিওটি দেখে ওই প্রতিবন্ধী যুবককের সন্ধানে গত ২১ সেপ্টেম্বর নান্দাইল আসেন চাচা দাবিদার কাজী আক্তার হোসেন সহ সহোদর এক বোন, এক চাচাতো বোন ও এক ফুফু।
তারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করে নান্দাইল মডেল থানার ওসির সহযোগিতা চান। ওসি বিষয়টি দেখার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন মিল্টন ভূঁইয়াকে দেখার জন্যে দায়িত্ব দিলে তিনি একাধিক আলোচনা ও সালিশের আয়োজন করেন।
চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন মিল্টন ভূঁইয়া জানান, প্রতিবন্ধী যুবকটি হাসেনপুর গ্রামে আবুল কালামের সন্তান পরিচয়ে বসবাস করে আসছে।
আবুল কালামের বড় ছেলে চন্দন মিয়া বলেন, আমরা এক সময় ঢাকার পান্থপথে থাকা অবস্থায় ছোট ভাই মিলন হারিয়ে গিয়েছিল। হারানোর ৮ মাস পর হাতিরঝিল এলাকা থেকে তাকে খুঁজে পাই। তারপর আমরা গ্রামের বাড়িতে চলে আসি। দুই বছর ধরে মিলন সরকারী ভাবে প্রতিবন্ধী ভাতাও পাচ্ছে।
যুবকটির চাচা দাবি করা আক্তার হোসেন বলেন, আলভীর জন্ম ২০০০ সালে। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে সে বাসা থেকে সবার অজান্তেই বের হয়ে যায়। তারপর থেকে নিখোঁজ। আমরা থানায় ডায়রি করেছি, মাইকিং সহ পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছি। কিন্তু
কোথাও খুঁজে পাইনি।
তিনি জানান, পরিবারের একমাত্র পুত্র সন্তানের শোকে কাঁদতে কাঁদতে গত আড়াই বছর আগে তার মা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে।
বর্তমানে বসবাসরত পরিবারের দাবি সে কাজী আলভী নয়, আমাদের মিলন মিয়া। তারপরও ডিএনএ পরীক্ষায় যদি তাদের সন্তান প্রমাণিত হয় তাহলে তাকে নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না।
শেরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন মিল্টন ভূঁইয়া জানান, আপাতত সমাধান না হওয়ায় ডিএনএ পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, স্থানীয় চেয়ারম্যান সাহেবকে ঘটনাটির সমাধানের জন্য বলেছি। সমাধান না হলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।