স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা থেকে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনের ছাদে ডাকাতির ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪ । চলন্ত ট্রেনের ছাদে ডাকাতি করতে বাধা দেয়াতেই দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় বলে র্যাব-১৪ জানিয়েছে।
রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র্যাব-১৪ কার্যালয় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এর আগে শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব-১৪।
গ্রেফতাররা হলেন-নগরীর শিকারীকান্দা এলাকার আশরাফুল ইসলাম স্বাধীন (২৬), বাঘমারা এলাকার মঞ্জু মিয়ার ছেরে মাকসুদুর হক রিশাদ (২৮), সাব্বির খানের ছেলে মো. হাসান (২২), মৃত আশরাফ আলীর ছেলে রুবেল মিয়া (৩১) এবং সাব্বির খানের ছেলে মোহাম্মদ (২৫)।
র্যাব-১৪ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও মিডিয়া অফিসার মো. হান্নানুল ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনের ছাঁদে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আশরাফুল ইসলাম স্বাধীন নামে একজনকে নগরীর শিকারিকান্দা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে তার কাছ থেকে লুন্ঠিত মোবাইল জব্দ করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে বাকি চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করে র্যাব।
তিনি আরও জানান, ঘটনার দিন ডাকাতির উদ্দেশ্যে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে চারজন পেশাদার ডাকাত ওই ট্রেনে ওঠেন। পরে রিশাস, হাসান এবং স্বাধীন নামে আরও তিনজন টঙ্গী স্টেশন থেকে তাদের সঙ্গে যুক্ত হন। ট্রেনটি ফাতেমা নগর স্টেশনে থামলে তাদের সাথে যোগ দেন মোহাম্মদ ও তার একজন সহযোগী। ট্রেনটি স্টেশন ছেড়ে চলতে শুরু করলে তারা ছাদে বসে থাকা যাত্রীদের মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে সাগর মিয়া ও নাহিদ তাদের বাধা দিলে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এ সময় ডাকাতরা তাদের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে ওই দুজনের মাথায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন। সাগর ও নাহিদ ট্রেনের ছাদে লুটিয়ে পড়লে ডাকাতরা ময়মনসিংহ রেলস্টেশনে ঢোকার আগের সিগন্যালে ট্রেনের গতি কমলে ট্রেন থেকে নেমে যান।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ব্যক্তিরা স্বীকার করেছেন, এদের এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার কমলাপুর এয়ারপোর্ট ও টঙ্গী রেলস্টেশন থেকে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ট্রেনে উঠতেন এবং তাদের কিছু সহযোগী গফরগাঁও ফাতেমা নগর স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে সম্মিলিতভাবে ডাকাতি ও ছিনতাই করে ময়মনসিংহ স্টেশনে নেমে যেতেন। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেযার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এর আগে, শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টার দিকে ছুরিকাঘাতে নিহত সাগরের মা হনুফা খাতুন বাদী হয়ে ময়মনসিংহ জিআরপি থানায় অজ্ঞাত ৮/১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
গত বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দেওয়ানগঞ্জগামী জামালপুর কমিউটার ট্রেনটি গফরগাঁও স্টেশনে পৌঁছালে ছাদে কয়েকজন ডাকাত ওঠে। ডাকাতির সময় বাধা দিলে তারা প্রথমে নাহিদ মিয়া ও সাগর মিয়া নামে দুজনকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। পরে রুবেল মিয়া নামে আরেকজনকে ছুরিকাঘাত করা হয়। ট্রেনটি জামালপুর পৌঁছালে তিনজনকে ছাদ থেকে নামিয়ে হাসপাতালে নেয়া হলে নাহিদ ও সাগরকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।