স্টাফ রিপোর্টার : শারদীয় দুর্গাপূজার মহাবিজয়া দশমী ও প্রতিমা নিরঞ্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মালম্বীদের ৫দিন ব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব। শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টায় মহাবিজয়া দশমী (বিহিত) পূজা এবং পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিমা নিরঞ্জন ও শান্তিজল গ্রহণ।
গত সোমবার ষষ্ঠী পূজা, দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। অসুরের বিনাশ আর শান্তি কল্যাণ ও সমৃদ্ধি লাভের আশায় যুগযুগ ধরে মা দুর্গার আরাধনা করে আসছে হিন্দু সম্প্রদায়। বিজয়া দশমীতে ময়মনসিংহ মহানগরী ও এর আশপাশের এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদে ও পারিবারিক জলাশয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা দেবীদুর্গাকে বিসর্জন দেয়।
বিজয়া দশমী উপলক্ষে গতকাল বিকেলে ময়মনসিংহ আর্যধর্ম জ্ঞান প্রদায়িনী সভা (ধর্মসভা) দূর্গাবাড়ী মন্দির কমিটির আয়োজনে মন্দির প্রাঙ্গন থেকে এক মঙ্গল শুভাযাত্রা শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কাচারীঘাটস্থ ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে গিয়ে উপস্থিত হন। একই ভাবে পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ নগরীর অন্যান্য মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ ও ভক্তবৃন্দদের সাথে নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে উপস্থিত হন এবং একে একে প্রতিমা বিসর্জন দেন।
এসময় পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট রাখাল চন্দ্র সরকার, কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য এডভোকেট প্রনব কুমার সাহা রায়, আর্যধর্ম জ্ঞান প্রদায়িনী সভা (ধর্মসভা) কমিটির সভাপতি প্রফেসর বিমল কান্তি দে, সাধারণ সম্পাদক শংকর সাহা, দূর্গাবাড়ী পূজা উপ-কমিটির সভাপতি শ্রী স্বপন কুমার ঘোষ, সম্পাদক শ্রী বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীসহ পূজা উদযাপন কমিটি ও আর্যধর্ম জ্ঞান প্রদায়িনী সভা(ধর্মসভা) কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে কাচারীঘাটস্থ ব্্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে বির্সজন ঘাটে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো: ইকরামুল হক টিটু’র আয়োজনে আগত প্রতিমা বির্সজনের আসা পুজারী ভক্তবৃন্দদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
এসময় বিশর্জন ঘাটে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক, পুলিশ সুপার মো: আহমার উজ্জামান, স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক একেএম গালিভ খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফজলে রাব্বি, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র আশিফ হোসেন ডন, মেডিকেল অফিসার ডাঃ রেদাউর রহমান, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন কর্মকর্তা দীপক মুজুমদার, কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ কামাল আকন্দ, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, কাউন্সিলর ফারুক হাসান, তাজুল আলম, হামিদা পারভীন, শামিমা আক্তার, জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, স্বেচ্ছা সেবকলীগ সভাপতি এডভোকেট এ বি এম নুরুজ্জামান খোকন, সাধারণ সম্পাদক উত্তম চক্রবর্তী রকেট, পূজা উদযাপন পরিষদ মহানগর শাখার সভাপতি এডভোকেট তপন চন্দ্র দে সহ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর, কর্মকর্তা, কর্মচারী জেলা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন পূজামন্ডপের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বিপুল সংখ্যাক ভক্ত, দর্শনার্থী ও সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিমা নিরঞ্জনকালে ঘাটে ও রাস্তায় সার্বিক আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস টিম ও স্বেচ্ছা সেবক নিয়োজিত ছিলেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ অঞ্চলে কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
গত বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) ছিল মহা-নবমী। মন্ডপে মন্ডপে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ছিল উপচেপড়া ঢল। মহা-নবমী পূজা শেষে মন্ডপে মন্ডপে অঞ্জলী প্রদান, চন্ডীগ্রন্থ পাঠ, প্রার্থনা ও প্রসাদ বিতরণ করা হয়।