নান্দাইলে মুলা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক

আগ্রহী হয়ে উঠছেন অনেকে

প্রকাশিত: ১০:৩৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২২

শাহ্ আলম ভূঁইয়া, নিজস্ব প্রতিবেদক, নান্দাইল :

সবজি আর সালাদ হিসেবে মুলা সবার কাছে অত্যন্ত প্রিয়।তাই এ ফসলটির ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষক ঝুঁকছেন মুলা চাষাবাদের দিকে। শ্রম ও খরচ কম,লাভ বেশী তাই ময়মনসিংহের নান্দাইলে কৃষক মুলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।এতে বাড়ছে মুলা চাষের আবাদ। মুলা চাষের জন্য নান্দাইলের মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় ফলনও হচ্ছে বেশ।

নান্দাইলে এবার মূলার ব্যাপক ফলন হয়েছে। ফলন ভাল হওয়ায় মুলা চাষিদের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে তৃপ্তির সাদা হাসি।সাদা মুলার মুক্ত হাসিতে কৃষকের শরীর, মন ও দেহ এখন সতেজ।উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে কৃষক খেত থেকে মুলা তোলতে এবং বাজারে বিক্রি করতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। বিশেষ করে উপজেলার চরবেতাগৈর ইউনিয়নে মুলার ব্যাপক আবাদ ও বাম্পার ফলন হয়েছে।

হাটশিরার চরাঞ্চল,চরকামট খালী, চরকোমরভাঙা, চরশ্রীরামপুর,লক্ষিরচর, চরলক্ষিদিয়া,চরভেলামারী মুলা চাষের জন্য বিখ্যাত।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলায় ৪৫ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মুলা চাষ হয়েছে। বাজারে দাম ভালো আর চাহিদা থাকায় অল্প পরিশ্রমের এ ফসলটি চাষ করে কৃষক স্বাবলম্বী হচ্ছেন। সবাই অপ্রত্যাশিত আয় করে সংসারের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি কিছু করছেন প্রতিবছরই। ড়সঞ্চয় করছেন টাকা-পয়সা।

শীতকালীন ফসল হিসেবে ভোক্তাদের কাছে মুলার প্রচুর চাহিদা এবং বাজার দর ভালো থাকায় ভালো আকৃতির প্রতি হালি মুলা ৬০ টাকা,৪০ টাকা এবং মাঝারি মানের মুলা ২৫ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে। মুলা তোলার আগে অনেক কৃষক শাক বিক্রি করেও ব্যাপক লাভবান হন।এছাড়া মুলার গাছ গবাদিপশুর খাবার হিসেবেও বেশ চাহিদা রয়েছে।

এবার মুলা চাষে পোকামাকড়ের আক্রমণও অনেক কম ছিল। মূলার আকারও বড় হয়েছে। দেখতেও সুন্দর লাগছে। যার কারণে পাইকাররা মুলা দেখেই বায়না করে যাচ্ছে। বাজারেও ব্যাপক চাহিদা।

চরকামট খালী গ্রামের কৃষক রফিকুল জানান, এবার মুলার ভাল ফলন হয়েছে। ২০ শতক জায়গা থেকে এখন পর্যন্ত তিনি ১৭ হাজার টাকার মুলা বিক্রি করেছেন।

চরলক্ষিদিয়া গ্রামের কৃষক আতাবুর বলেন, এ বছর তিনি দেড় বিঘা জমিতে মূলার চাষ করেন। এতে তার উৎপাদন বাবদ খরচ হয় আট থেকে নয় হাজার টাকা। এ পর্যন্ত বিক্রি হয়ছে ৪৫ হাজার টাকা। আরো ১০ হাজার টাকার মুলা বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা করেন। প্রতি বছরেই তিনি মুলা চাষ করেন।

চরভেলামারী,চরশ্রীরামপুর,চরউত্তরবন্দ, চরকোমরভাঙা, হাটশিরা গ্রামের হুমায়ুন,আবুল কালাম,শহীদ,আমজাদসহ একাধিক কৃষক জানান,এবার মুলাতে তাদের উৎপাদন খরচের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ লাভ হয়েছে। আগামীতে তারা আরো বেশি করে মূলাচাষ করবেন। তারা সরকারের নিকট সহজ শর্তে কম সুদে মৌসুম ভিত্তিক ঋণ দেওয়ার দাবী করেন।

নান্দাইল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার নাদিয়া ফেরদৌসি বলেন, উপ- সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের তদারকিতে নান্দাইলের কৃষক মুলা চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। মুলা চাষে কোন প্রকার বালাইনাশকের প্রয়োজন হয়না।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, সবজি উৎপাদনে নান্দাইলের খ্যাতি রয়েছে। শীতকালীন সবজি মুলা চাষ করে কৃষক অনেক লাভবান হচ্ছেন। ফলে দিান দিন মুলা চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।