শাহ্ আলম ভূঁইয়া, নিজস্ব প্রতিবেদক, নান্দাইল থেকে:
ময়মনসিংহের নান্দাইলে খরার তীব্রতায় রোপা আমন ধানের জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে।প্রখর রোদে সব শুকিয়ে যাচ্ছে।রোদে পুড়ে বিবর্ণ হয়েছে রোপা আমন ধানের চারাগুলো। এ অবস্থায় স্থানীয় কৃষি বিভাগ সেচযন্ত্র চালুর মাধ্যমে জমিতে পানি দিয়ে ধান রোপণের পরামর্শ দিয়েছে।
ভাদ্র মাসের শুরুতেই চৈত্র মাসের মতো খরা। কাঠফাটা তপ্ত রোদে ও ভ্যাপসা গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বৃষ্টির দিকে চেয়ে আছে মানুষসহ প্রাণীকুল। লাগানো জমিতে ধান বাঁচাতে মহাদুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষক।
আষাঢ় শ্রাবন মাসে কাঙ্খিত বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষক সময়মত জমিতে রোপা আমন রোপন করতে পারেননি। দেরি করে রোপন করলেও বৃষ্টির অভাবে রোদে পুড়ে বিবর্ণ হয়েছে রোপা আমন ধানের চারাগুলো। ফেটে চৌচির হচ্ছে আবাদি জমি।
সরেজমিন নান্দাইল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ফসলের মাঠ ঘুরে রোপা আমন ধানের জমিতে দেখা যায় রোপা আমন ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে আছে। কোথাও বৃষ্টির ছিটেফোটা নেই। খরায় পুড়ছে নান্দাইলের জনপদ। এ সময় রোপনকৃত জমি বৃষ্টির পানিতে জলমগ্ন থাকার কথা থাকলেও আবাদি জমি ফেটে চৌচির হয়েছে। এ কারণে রোপনকৃত আমন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। বৃষ্টির জন্য দিন গুনছেন তারা। আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকেন কখন হবে বৃষ্টি।
উপজেলার কয়ারপুর, আব্দুল্লাহপুর, নাগপুর খড়িয়া, বীরকামট খালী, খারুয়াসহ একাধিক গ্রামে মাঠে এখন রোপা আপন ধানের জমি সবুজে ভরে গেছে। তবে, পানির অভাবে অধিকাংশ ধানক্ষেত ফেটে চৌচির। প্রচণ্ড তাপদাহে ধান গাছ বিবর্ণ হচ্ছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।সদ্য রোপন করা ধানের চারা শুকিয়ে মরে যাচ্ছে।
চরাঞ্চলের কৃষকরা বৃষ্টির অপেক্ষায় থেকে দেরিতে করে হলেও বাধ্য হয়ে সেচ দিয়ে আমন রোপণ শুরু করেছেন। এতে তাদের বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে।
চরকামট খালী,চরকোমরভাঙা গ্রামের কৃষক ফরিদ, কালাম সহ অনেকেই জানান, এ বছর চাহিদা অনুযায়ী বৃষ্টি না হওয়ায় শ্যালো মেশিন ও বৈদ্যুতিক মোটর চালিয়ে জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে। এতে তাদের বাড়তি খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, ফসলের ক্ষেত ফেটে চৌচির হওয়ায় জমির ফসল নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। পানির অভাবে অনেকে জমিতে আমন ধান লাগাতে পারছেন না।আমনচাষে বিঘ্ন ঘটলে প্রান্তিক চাষিরা পড়বে লোকসানে।
উপজেলা কৃষি অফিসসূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় ২২ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, চলতি মৌসুমে তুলনামূলক কম বৃষ্টি হয়েছে। যা আমন চাষের উপযোগী নয়। প্রচণ্ড তাপদাহে আমন ক্ষেত ফেটে যাওয়ায় এবং তাপদাহ মোকাবেলা করে আমন চাষ করার বিষয়ে কৃষকদের সম্পূরক সেচের মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। এবিষয়ে মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।