বিনোদন ডেস্ক : এমন ঘটনা সচরাচর ঘটে না। যেমনটা এবার ঘটতে যাচ্ছে প্রশংসিত সিনেমা ‘শিমু’র ভাগ্যে। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় দেশের ৬৪ জেলার শিল্পকলা একাডেমিতে একযোগে প্রদর্শিত হবে রুবাইয়াত হোসেনের এই চলচ্চিত্র।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছে নির্মাতার পাশাপাশি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে ও আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনে পোশাক শিল্পের যে ভূমিকা আছে তার আলোকে দৃঢ়চেতা নারী পোশাক শ্রমিকদের সংগ্রাম ও সাফল্যের গল্প বলা হয়েছে এই চলচ্চিত্রে। ‘শিমু’ প্রতিকূলতাকে জয় করে সামনে এগিয়ে চলা প্রতিটি সংগ্রামী মানুষের গল্প। সমতার প্রশ্নে এই সিনেমার প্রধান চরিত্র শিমু একজন সম্মুখ যোদ্ধা।
ছবিটি নিজ নিজ জেলার শিল্পকলায় গিয়ে দেখার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেছেন নির্মাতা।
শ্রমিক নেত্রী ডালিয়া আক্তারের জীবনের সত্য ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত হয়েছে এই চলচ্চিত্র। যা নারী দিবস উপলক্ষে দেশের সিনেমা হলে মুক্তি পায় গত বছর ১১ মার্চ।
রুবাইয়াত হোসেনের পাশাপাশি ছবিটির মূল কুশলীদের অধিকাংশই ছিলেন নারী। চিত্রগ্রহণে সাবিনল্যাঞ্চেলিন, শব্দ গ্রহণে এলিশা আলবার্ট এবং শিল্প নির্দেশনায় জোনাকি ভট্টাচার্যের নাম উল্লেখযোগ্য।
চলচ্চিত্রটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিকিতা নন্দিনী শিমু, নভেরা রহমান, দীপান্বিতা মার্টিন, পারভীন পারু, মায়াবি মায়া, মোস্তফা মনোয়ার, শতাব্দী ওয়াদুদ, জয়রাজ, মোমেনা চৌধুরী, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, ওসামিনা লুৎফা প্রমুখ। দুটি অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিতা চৌধুরী ও ভারতের শাহানা গোস্বামী।
চলচ্চিত্র ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ বা ‘শিমু’-এর কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের লোকার্নো চলচ্চিত্র উৎসবে ওপেনডোরস ল্যাব-এ অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে। চিত্রনাট্যের জন্য রুবাইয়াত হোসেন জিতে নেন আর্টে ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার।
টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ারের পর ছবিটি প্রদর্শিত হয় ৬৩তম বিএফআই লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসবে। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সমাদৃত ও পুরস্কৃত হয়েছে ছবিটি। ফ্রান্সের সেইন্ট জঁদ্য-লুজ চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতে নেন রিকিতা নন্দিনী শিমু। ইতালির টোরিনো বাতুরিন চলচ্চিত্র উৎসবে পেয়েছে ইন্টারফেদি পুরস্কার এবং ফ্রান্সের এমিয়েন্স আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জিতে নিয়েছে সেরা দর্শক ও জুরি পুরস্কারসহ ৩টি পুরস্কার।
আরেকটি দৃশ্য ২০১৯-এর ডিসেম্বরে ফ্রান্স, ডেনমার্ক, কানাডা ও পর্তুগালের বিভিন্ন সিনেমা হলে বাণিজ্যিকভাবে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ নামে মুক্তি পায় ছবিটি। এরপর ২০২০ আমেরিকার বিভিন্ন হলে প্রদর্শনের পর ছবিটি বাণিজ্যিকভাবে দেখানো হয় ম্যাক্সিকো, চীন, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, জাপান ও জার্মানির সিনেমা হলে।
বাংলাদেশের খনা টকিজ ও ফ্রান্সের লা ফিল্মস দ্য এপ্রেস-মিডির ব্যানারে নির্মিত শিমু ছবিটির প্রযোজক ফ্রঁসোয়া দক্তেমা ও আশিক মোস্তফা এবং সহ-প্রযোজক পিটার হিলডাল, পেদ্রো বোর্হেস, আদনান ইমতিয়াজ আহমেদ ও রুবাইয়াত হোসেন। আর ছবিটির পরিবেশনা ও আন্তর্জাতিক বিক্রয় প্রতিনিধি ফ্রান্সের পিরামিড ফিল্মস।
প্রথম ছবি মেহেরজান (২০১১) এবং দ্বিতীয় ছবি আন্ডার কনস্ট্রাকশন (২০১৫)-এর পর ‘শিমু’ রুবাইয়াত হোসেনের তৃতীয় ছবি।