আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুদ্ধ করছে না মিয়ানমারের সেনা সদস্যরা। দেশটির সামরিক বাহিনী থেকে পালাতে শুরু করেছে সেনারা। এছাড়া তরুণদের অনীহার কারণে নতুন করে সেনা নিয়োগ কঠিন হয়ে পড়েছে বাহিনীর পক্ষে। বাহিনী থেকে পালিয়ে যাওয়া সদস্যদের বরাত দিয়ে বুধবার বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
দুই বছর আগে অং সান সু চিকে হটিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এরপর থেকে দেশটিতে গণতন্ত্রপন্থীদের ওপর দমন-পীড়ন শুরু করে সেনাবাহিনী।
নে অং নামে এক দলত্যাগী সেনা বলেছেন, ‘কেউ সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে চায় না। মানুষ তাদের নিষ্ঠুরতা এবং অন্যায় আচরণকে ঘৃণা করে।’
তিনি জানান, প্রথমবার যখন তিনি তার ঘাঁটি ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেন তখন তাকে রাইফেলের বাট দিয়ে প্রচণ্ডভাবে মারধর করা হয় এবং তাকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলা হয়।
নে অং দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় পালাতে সক্ষম হন এবং জান্তাবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর সমর্থনে সীমান্ত পেরিয়ে থাইল্যান্ডে চলে যান।
তিনি বলেন, ‘আমার এক বন্ধু প্রতিরোধ গ্রুপে আছে। আমি তাকে ফোন করেছিলাম এবং সে এখানে থাইল্যান্ডের লোকদের আমার সম্পর্কে বলেছে। আমি তাদের সাহায্যে এখানে এসেছি।’
নে অং এখন আরও ১০০ সদ্যত্যাগী সেনা এবং তাদের পরিবারের সাথে একটি সেফ হাউসে বসবাস করছেন। এরা সবাই মিয়ানমারের নাগরিকদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে অস্বীকার করেছিল।
মিয়ানমারের নির্বাসিত জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) দেওয়া তথ্য অনুসারে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর থেকে ১৩ হাজারেরও বেশি সেনা ও পুলিশ সদস্য দেশত্যাগ করেছে। সেনাদের পক্ষ ত্যাগের জন্য নগদ প্রণোদনা এবং সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
দলত্যাগী আরেক সেনা মং সেইন বলেন, ‘আমরা অনলাইনে দেখেছি মানুষ আমাদেরকে ‘সেনা কুত্তা’ বলে সম্বোধন করে। আমাকে এই বিষয়টি অনেক পীড়া দিত।’
মিয়ানমারের সেনা সংখ্যা ঠিক কত তা জানা যায় না। তবে পর্যবেক্ষকদের ধারণা, ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের সময় দেশটির সেনা সংখ্যা তিন লাখ ছিল। তবে সেই সংখ্যা এখন অনেক কমে গেছে।