আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মেক্সিকোর একটি গিরিখাত থেকে ৪৫টি ব্যাগভর্তি মানুষের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গ উদ্ধার হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় জালিসকো অঙ্গরাজ্যের একটি গিরিখাত থেকে এসব ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, গত সপ্তাহে নিখোঁজ হওয়া সাত ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে অভিযান চালানোর সময় মানুষের দেহাবশেষ ভর্তি ওই ব্যাগগুলো পাওয়া গেছে।
এক বিবৃতিতে মেক্সিকোর সরকারি কৌঁসুলির কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ৪৫টি ব্যাগের ভেতর মানুষের দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। সেখানে নারী ও পুরুষের দেহাবশেষ ছিল।
গত মঙ্গলবার গুয়াদালাজারার শহরতলি জাপোপানে একটি ৪০ মিটার (১২০ ফুট) গভীর গিরিখাতের একেবারে নিচ থেকে মানুষের দেহাবশেষ ভর্তি ব্যাগগুলো উদ্ধার হয়েছে।
সম্প্রতি কর্তৃপক্ষ নিখোঁজ হওয়া দুই নারী ও পাঁচ ব্যক্তির সন্ধানে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। গত ২০ মে থেকে তারা নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের প্রত্যেকের বয়স ৩০ বছরের কাছাকাছি।
নিখোঁজ হওয়ার পর পৃথক দিনে কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়টি জানানো হয়। তবে তদন্তকারীরা বলছেন, নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিরা সবাই একই কল সেন্টারে কাজ করতেন। যে এলাকা থেকে তাদের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে সেই একই জায়গায় কল সেন্টারটির অবস্থান।
ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ওই দেহাবশেষ পরীক্ষা করে দেখবেন এবং নিহত মানুষের সংখ্যা কত তা যাচাই করবেন। সে কারণে এখনই কারও পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে, কল সেন্টারটি অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে। কারণ কর্তৃপক্ষ সেখান থেকে গাঁজা এবং অন্যান্য জিনিসপত্র উদ্ধার করেছে। তবে নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ ভুক্তভোগীদের অপরাধী হিসেবে দেখাতে চাইছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জালিসকোর বিভিন্ন এলাকায় ব্যাগের ভেতর কিংবা অস্থায়ী কবর থেকে মানুষের দেহাবশেষ উদ্ধার হতে দেখা গেছে।
এর আগে ২০২১ সালে জালিসকোর টোনালা পৌরসভায় প্রায় ৭০টি ব্যাগের ভেতর থেকে ১১ ব্যক্তির দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ২০১৯ সালে জাপোপান এলাকায় ১১৯টি ব্যাগের ভেতর থেকে ২৯ জনের দেহাবশেষ উদ্ধার হয়।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম দুই মাসেই গুয়াদালাজারা এলাকায় পাঁচটি অস্থায়ী কবর থেকে ৩৩ জনের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে বিতর্কিত মাদক বিরোধী একটি সামরিক অভিযান শুরু করে মেক্সিকো। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে ৩ লাখ ৪০ হাজারের বেশি খুন এবং প্রায় এক লাখ মানুষের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা রেকর্ড হয়েছে।