মরক্কোতে ভূমিকম্পে মৃত্যু এক হাজার ছাড়িয়েছে

প্রকাশিত: ৭:৪৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ছয় দশকের সবচেয়ে প্রাণঘাতী এক ভূমিকম্পে উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোতে নিহতের সংখ্যা মরক্কোয় ভূমিকম্পে মৃত্যু ১ হাজার ছাড়িয়েছে । স্মরণকালের ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন আরও শত শত মানুষ। ধ্বংস হয়েছে অসংখ্য বাড়িঘর।

শুক্রবার গভীর রাতে মরক্কোর হাই এটলাস পর্বতমালায় রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভূমিকম্পের হালনাগাদ তথ্যে বলেছে, ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৮২০ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৬৭২ জন।

স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছেন, ভূমিকম্পে পার্বত্য অঞ্চলে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে। এসব এলাকায় পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের সবচেয়ে কাছের শহর মারাখেসের আতঙ্কিত বাসিন্দারা বাড়িতে না গিয়ে খোলা জায়গায় রাত কাটিয়েছেন।

ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ স্থাপনার অন্তর্ভুক্ত দেশটির পুরোনো ও ঐতিহ্যবাহী মারাখেস শহরের ভবনগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মারাখেসের প্রাণকেন্দ্র জেমা আল-ফনা স্কয়ারের একটি মসজিদের মিনার ধসে গেছে। দেশটির উদ্ধারকারী কর্মীরা ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে জীবিতদের উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করছেন।

শহরটির বাসিন্দা মিলোদ স্ক্রউত বলেছেন, সবকিছুই সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা। তবে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। ভূমিকম্পে আহতদের শতাধিক স্বজন মারাখেসের স্থানীয় একটি হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষা করছেন। মারাখেসের হাসপাতালে ভর্তি আহতদের বেশিরভাগই শহরের বাইরের পার্বত্য অঞ্চল থেকে এসেছেন। স্থানীয় হাসপাতালে গুরুতর আহতদের চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা না থাকায় তাদের সেখানে নেওয়া হয়েছে।

দেশটির ঐতহ্যবাহী মারাখেস শহরের বাসিন্দা জাওহারি মোহাম্মদ লোকজন ভূমিকম্পের সময় নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য কীভাবে মরিয়া হলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, সেই দৃশ্য বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ভূমিকম্পের কারণে আমি এখনও বাড়িতে ঘুমাতে পারি নাই। পুরোনো শহরটির বাড়িঘরগুলো অনেক পুরোনো।

তিনি বলেন, এখানে যদি একটি ঘর পড়ে যায়, তাহলে সেটির কারণে আরেকটিও পড়ে যাবে।

মরক্কোর পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তারৌদন্তের কাছের একটি এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক হামিদ আফকার। তিনি বলেন, ভূমিকম্পের সময় তিনি বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। কয়েকবার আফটারশকও অনুভূত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। হামিদ বলেন, প্রায় ২০ সেকেন্ড ধরে ভূমিকম্পটি স্থায়ী ছিল। আমি দ্বিতীয় তলা থেকে নিচে নেমে আসার সাথে সাথেই দরজা নিজেই খুলে গেল এবং বন্ধ হয়ে গেল।

দেশটির ভূমিকম্প কেন্দ্র বলেছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ১১টার পর হাই এটলাসের ইঘিল এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস বলছে, ১৯৬০ সালের পর শুক্রবার এই ভূমিকম্প দেশটিতে সবচেয়ে প্রাণঘাতী। ওই বছর দেশটিতে শক্তিশালী এক ভূকম্পনে কমপক্ষে ১২ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে।