এম আজিজ ॥
মহামারি করোনা দুর্যোগের কারণে বিলম্বিত হলেও সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অধীন নবায়নযোগ্য জ্বালানি পরিবেশ বান্ধব দেশের সর্ববৃহৎ (সোলার) সৌরবিদ্যুত উৎপাদন প্রকল্প’ বাস্তবায়নের কাজ শেষ হয়েছে। ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ‘সুতিয়াখালিতে ৫০ মেগাওয়াট (সোলার) সৌরবিদ্যুত উৎপাদন প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করা হয়। আগামী অক্টোবর মাসে উৎপাদন শুরু হবে বলে প্রকল্প সংশিষ্টরা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর জাতীয় গ্রিডে আরো ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে।
সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অধীনে নবায়নযোগ্য জ্বালানি পরিবেশ বান্ধব সৌরবিদ্যুত বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের যৌথ উদ্যোগে বেসরকারী এইচ.ডি.এফ.সি সিন-পাওয়ার লিমিটেড সুতিয়াখালিতে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ১৭৪ একর জমির ওপর ৮০০ (আটশত) কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন গ্রকল্পের কাজ ২০১৭ সালে শুরু করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ময়মনসিংহের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর তত্ত্ববধানে প্রকল্পের অধীনে অফিস ভবন, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ শাসন বাঁধ, কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ, এক বর্গকিলো মিটার এলাকা জুড়ে সোলার গ্লেট বসানো, ১০টি বক্স ট্রান্সমিশনে সংযোগ প্রদান, সাব-স্টেশনসহ ১৩২ কেভিএ ট্রান্সমিশন টাওয়ার নির্মাণ, কেওয়াটখালীস্থ জাতীয় গ্রীড লাইন পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার আন্ডার গ্রাউন্ড ক্যাবল স্থাপন এবং এক কিলোমিটার ওভারহেড ট্রান্সমিশন সঞ্চালন লাইন স্থাপনের কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
প্রকল্প ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ জানিয়েছেন, প্রকল্পের ইকুইপমেন্ট টেস্টিং ও কমিশনিংয়ের পর পরীামূলক কাজ চলছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হলে কেওয়াটখালীস্থ জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সঞ্চালিত হবে। এই প্রকল্পের সুফল ময়মনসিংহবাসী পাবে।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২০ সালের মধ্যে ব্যবহৃত বিদ্যুতের শতকরা দশভাগ সৌরবিদ্যুত উৎপাদনের ল্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়। জ্বালানি মন্ত্রনালয়ের সাথে ২০১৭ সালে এইচ.ডি.এফ.সি সিন-পাওয়ার লিমিটেড চুক্তি সম্পন্নের পর চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারিতে প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত চীনা প্রকৌশলীরা ইংরেজী নববর্ষের ছুটিতে দেশে যাওয়ায় সোলার প্লেট বসানো ও সংযোগের কাজ বিলম্বিত হয়েছে। না হলে ৬ মাস পূর্বেই বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হতো। এইচ.ডি.এফ.সি সিন-পাওয়ার লিমিটেডের পরিচালক গ্র“প ক্যাপ্টেন (অবঃ) শেখ মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারের দেয়া বর্ধিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পের উদ্বোধন করার পর বিদ্যুত উৎপাদন শুরু হবে।
সৌর বিদ্যুত প্রকল্পে কর্মরত চীনা প্রকৌশলী বলেন, দেশে চলমান সৌর বিদ্যুত প্রকল্পের মধ্যে এটি সর চেয়ে বড় ও মেগা প্রকল্প। এই প্রকল্পের সকল কাজ সম্পন্ন হয়েছে, আগামী মাসে (অক্টোবর) প্রকল্পটি চালু হবে।
পরিবেশ বান্ধব দেশের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুত প্রকল্পটি সরকারের উন্নয়নের রোল মডেল উলেখ করে নাগরিক সমাজরের নেতা এডভোকেট নজরুল ইসলাম চন্নু ও আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, এই প্রকল্পের ফলে অনেক মানুষের কমংসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশে ব্যবহৃত বিদ্যুতের শতকরা দশ ভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষ করে পরিবেশ বান্ধব সৌর বিদ্যুত উৎপাদনের ল্য অর্জনে ময়মনসিংহের সুতিয়াখালীর ৫০ মেগাওয়াট (সোলার) সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প দেশে মাইল ফলক হিসাবে বিবেচিত হবে বলে সকলের প্রত্যাশা।