গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা : একাদশ শ্রেণীতে পড়ুয়া কলেজ ছাত্রীকে ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা করল এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কলেজ ছাত্র (১৯)।
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার গোয়ালভর গ্রামে সোমবার রাত দশটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের পরিবার, বন্ধুবান্ধব, এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অন্যদিনের মতো সোমবার রাতেও প্রেমিকার সঙ্গে ফেসবুক মেসেঞ্জারে কথা বলছিল কলেজ ছাত্র। হঠাৎই কথা কাটাকাটি। ফোন রেখে দেয় প্রেমিক কলেজ ছাত্র।
বার বার ফোন করতে থাকে ওই ছাত্রী। কিছু সময় পরেই প্রেমিকের ফোনটি বেজে ওঠে। এ বার ভিডিও কল। ফোনটা রিসিভ করেই দেখে গলায় দঁিড়র ফাঁস দিয়ে, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে দড়ির প্রান্ত বেঁধে খাটের উপর একটি প্লাষ্টিকের মোড়ার মধ্যে দাড়িয়ে আছে কলেজ ছাত্র।
ফোনে প্রেমিকার কাছে শেষবারের মতো ক্ষমা চেয়ে এবং বিদায় নিয়ে প্রেমিকাকে তার আত্মহত্যার কথা জানায় কলেজ ছাত্র। প্রেমিকা কলেজ ছাত্রী ফোনে কান্না করে,অনুনয় করে, ওয়াদা করে সারা জীবন প্রেমিকের কথা মতো চলার, কিন্ত তাতে মন গলে নাই প্রেমিকের। সে প্রেমিকাকে আত্মহত্যার কথা বলে পায়ের নীচের প্লাষ্টিকের মোড়াটি এক সময় সরিয়ে দেয়।
সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলতে থাকে কলেজ ছাত্র। কোনও উপায় না পেয়ে কলেজ ছাত্রের চাচাতো ভাই জয় (১৮) ও প্রেমিকের বন্ধুদের ফোন করে জানায় প্রেমিকা। কিন্ত ততক্ষনে সব শেষ। প্রেমিকের বাড়ির লোকজন ও বন্ধুবান্ধব কলেজ ছাত্রের রুমের দরজা ভেঙে রুমে ঢুকে দেখে কলেজ ছাত্রের প্রাণহীন নিথর দেহ ঝুলছে সিলিং ফ্যানের সাথে।
রাত তিনটার দিকে পাগলা থানা পুলিশ কলেজ ছাত্রের প্রাণহীন দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
উপজেলার গোয়ালভর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে সৌরভ । সে ২০২০ সালে শ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী বিশ^বিদ্যালয় কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। সৌরভের বন্ধুরা জানিয়েছে বেশ কয়েক মাস আগে কাওরাইদ-গয়েশপুর কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীর (আয়েশা,১৭) সাথে সৌরভের আলাপ । সেখান থেকেই ঘনিষ্ঠতা।
রোজই দীর্ঘ সময় নিয়ে তারা ফোনে কথা বলত, ভিডিও চ্যাটও করতো। ওই কলেজ ছাত্রীর বাড়ি পাশ^বর্তী ভালুকা উপজেলার রাজৈ গ্রামে।
পাগলা থানার ওসি মোঃ শাহিনুজ্জামান খান জানান, প্রাথমিক তদন্তে মনে হয়েছে প্রেমিকার সাথে অভিমানের জের ধরে কলেজ ছাত্র আত্মহত্যা করেছে । এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।