ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা :
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে আদর্শ বীজতলা তৈরী দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফলে সনাতন পদ্ধতির বীজতলার পরিবর্তে এখন আদর্শ বীজতলা তৈরীতে ঝুঁকছেন কৃষকরা। গত দুই বছর ধরে এ উপজেলা আদর্শ বীজতলার সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
আদর্শ বীজতলায় উৎপাদিত ধানের চারা যে কোনও বৈরী আবহাওয়া মোকাবিলা করতে সম। এ বীজতলার চারা সুস্থ্য ও সবল হয়। ফলে কোল্ড ইনজুরি ও পোকার আক্রমণের ঝুঁকিও কম।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আদর্শ পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনের জন্য প্রথমে শুকনো জমি ভালোভাবে চাষ করে জৈব ও রাসায়নিক সার দিতে হয়। জমি প্রস্তুত হলে ২ হাত প্রস্থ বিশিষ্ট বেড তৈরি করতে হয়। মানসম্মত বীজ ২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেগুলো বীজতলায় ছিটাতে হয়। বীজ ছিটানোর ২৫ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে চারাগুলো রোপণের উপযুক্ত হয়।
এ বছর ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ২০হাজার ১শ ৫৫হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যযমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত জমির জন্য ১হাজার ৫০হেক্টর বীজতলা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে ১হাজার ৭০হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরী হয়েছে। এর মধ্যে আদর্শ বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১শ ৫হেক্টর। তন্মধ্যে অর্জিত হয়েছে ২শ ৫০হেক্টর।
উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল হাই বলেন, পুরনো পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরী করে পোকা মাকড়ের আক্রমণ ও শীতকালীন বালাই মোকাবেলা করতে হত। কৃষি বিভাগের পরামর্শে আদর্শ পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করে এসব সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়না। এখন বীজতলায় চারা হয় সুস্থ্য সবল, ফলনও হয় ভালো।
উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, বোরো ধানের আদর্শ বীজতলা তৈরি করতে বীজ ধানের অপচয় কম হয়। সুস্থ-সবল চারা পাওয়া যায়। আদর্শ বীজতলায় পরিচর্যা করা সহজ ও চারা রোপণের পর দ্রুত কুশি ছাড়ে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার বলেন, আদর্শ বীজতলার চারার বৈশিষ্ট হচ্ছে চারা গুলো সুস্থ্য সবল হয়। বীজতলা থেকে চারা তোলার সময় শিকড়ে মাটি কম ধরে। ফলে চারাগুলো কোন আঘাত পায় না। জমিতে রোপনের পর শতভাগ চারা জীবিত থাকে এবং অল্প সময়ে বেড়ে উঠে। চারা সবল থাকায় ধানের ফলনও ভালো হয়। স্থানীয় পদ্ধতির চেয়ে এ পদ্ধতিতে বীজ কম লাগে। ফলে খরচও কম হয়।