বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) তেজগাঁওয়ে অবস্থিত জেলা ইপিআই’র স্টোরে ভ্যাকসিন রাখার ব্যবস্থাপনা দেখতে এসে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
অন্যান্য দেশে ভিআইপিরা আগে টিকা নিয়ে পরে তারা সাধারণ মানুষকে টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করছেন এবং উৎসাহ দিচ্ছেন। আমাদের দেশে এরকম কিছু হবে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা চাই, দেশে যাদের প্রয়োজন তাদেরকে আগে দিতে এবং আমাদের দেশের মানুষ ভ্যাকসিন নিতে অভ্যস্ত। বাংলাদেশের মানুষের কাছে ভ্যাকসিন নতুন কিছু না। দেশের মানুষ ভ্যাকসিনে ভয়ও পান না। কাজেই আমরা আশা করি, পর্যায়ক্রমে সবাইকে দিতে সক্ষম হবো।’
ভ্যাকসিন কবে নাগাদ প্রয়োগ শুরু হবে জানতে চাইলে জাহিদ মালেক বলেন, ‘ভ্যাকসিন বিতরণ নিয়ে গঠিত জাতীয় পরিকল্পনা অনুযায়ী সব হবে। তবে ঢাকায় কিছু ট্রায়াল রান করা হবে। সেই ট্রায়ালের অপেক্ষায় আছি।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে যুক্ত থাকবেন বলে জানান তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সারা দেশে টিকা বিতরণ করতে সময় লাগবে। আশা করছি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে সেরাম থেকে কেনা তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের ৫০ লাখ চলে আসবে। এরপর এই ৭০ লাখ ডোজ বিভিন্ন জেলায় পৌঁছে দেওয়া হবে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই ভ্যাকসিন রাখার ওয়ারহাউজ করা হয়েছে। সেখানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের দলও চলে যাচ্ছে, তাদের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। আমরা মোটামুটি প্রস্তুত, এখন কেবল সময়ের বিষয়।’
ট্রায়াল রানে কত জন থাকবেন জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘চিকিৎসক ও নার্সসহ সব শ্রেণি পেশার মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, পুলিশ, সেনাবাহিনী, সাংবাদিক সবাইকে নিয়ে এই ট্রায়াল করা হবে। তবে যেহেতু ভ্যাকসিন চলে এসেছে, আমাদের চেষ্টা— যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই ট্রায়াল করে ফেলার পর তাড়াতাড়ি ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করা।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ২০ মিনিটে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে করে ভারতের উপহার দেওয়া ২০ লাখ ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন দেশে পৌঁছায়। এরপর দুপুর ১টা ৫ মিনিটে তা তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ইপিআই’র স্টোরে আনা হয়।
ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন আবু হোসেন মো. মইনুল আহসান বলেন, ‘তেজগাঁওয়ের ইপিআই’র সংরক্ষণাগারে টিকা সংরক্ষণ করা হয়েছে। এখানে ৫০ লাখ ভ্যাকসিন রাখার সক্ষমতা আছে। ইতোমধ্যে দুটি ফ্রিজার খালি করা হয়েছে। প্রতিটি ফ্রিজারে ২০ লাখ ভ্যাকসিন রাখা যাবে।’
এদিকে দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম দোরাইস্বামী এক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে টিকা হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ শাহরিয়ার আলম, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।