সাইফুল ইসলাম তালুকদার, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) :
বেগুনি ধান চাষ করে সবার নজর কেড়েছেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের কৃষক নজরুল ইসলাম। এখন আমন মৌসুম চারদিকে সবুজ সোনালী ধানের সমারোহ। তার মাঝে একচিলতে জমিতে বেগুনী ধানের চাষ সৌন্দর্য্যের আবহ সৃষ্টি করেছে। ঝির ঝির বাতাসে বেগুনি ধানের ঢেউ খেলানো দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হন সবাই। অধিক ফলন ও সৌন্দর্য্যের মোহনীয়তায় এ ধান চাষে আকৃষ্ট হচ্ছেন কৃষকরা।
উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের হারুয়া ব্লকের কৃষক নজরুল ইসলাম দশ শতক জমিতে বেগুনি ধান চাষ করেছেন। ধানের সৌন্দর্য্য ও আশাতীত ফলনে এলাকায় জনপ্রিয় কৃষক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন তিনি। ধানের বাম্পার ফলন ও নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখার জন্য পথিক ণিকের জন্যে হলেও থমকে দাঁড়ায়।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এ বেগুনী ধানের নাম পার্পল লিফরাইস। সৌন্দর্য্য ও পুষ্টিগুণে ভরপুর। উফশী জাতের এ ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ অনেকটাই কম। রোপণ থেকে ধান পাকতে সময় লাগে মাত্র ১শ ৪৫দিন থেকে১শ ৫৫দিন। অন্য জাতের ধানের চেয়ে এ ধানের কুশির পরিমাণ বেশি থাকায় একর প্রতি ফলনও বেশি হয়।
কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে বেগুনি ধানের আবাদ করে অনেক সুফল পেয়েছেন। এ জাতের ধান আবাদে সার এবং কীটনাশক ব্যবহারের বেশি প্রয়োজন পড়ে না। ধানের সৌন্দর্য্য ও ফলন ভালো হওয়ায় বীজ নেওয়ার জন্য অনেক কৃষক ইতিমধ্যে যোগাযোগ শুরু করেছেন।
উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, ২০১৯সালে হালুয়াঘাট সীমানাবর্তী এলাকার উপজাতি সম্প্রদায়ের কাছ থেকে বেগুনী ধানের বীজ সংগ্রহ করেন। পরে তিনি তার নিজ ব্লক হারুয়া গ্রামে কৃষক চান মিয়ার ১০শতক জমিতে এ ধানের প্রথম আবাদ করেন। ফলন ভালো হওয়ায় এলাকায় কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়ে। অধিক ফলন হওয়ায় তরুণ উদ্যোক্তা ও সৌখিন কৃষকগণ বেগুনি ধান চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেন। এ ধানের বীজ ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এখন সরবরাহ হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন উন্নত জাতের দৃষ্টিনন্দন নতুন ধানের বীজ আমদানি করে এলাকায় কৃষি বিপ্লব ঘটানোর পরিকল্পনা রয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার বলেন, অন্য ধানের তুলনায় এ ধান একটু মোটা, তবে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। এ চালের ভাত খেতেও সুস্বাদু।এবার এ উপজেলায় প্রায় এক একর জমিতে বেগুনি রংয়ের ধান চাষ করা হয়েছে । উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে ও সংগৃহীত বীজে নজরুল ইসলাম তার জমিতে বেগুনি ধানের চাষ করেছেন। এতে বেগুনি ধানের চাষ করতে অন্য কৃষকরাও উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠেছেন।