মতিউর রহমান সেলিম, ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) :
ছয় কিলোমিটারের পিচঢালা সড়কজুড়ে অসংখ্য খানাখন্দ। জনসাধারন ও যানবাহন চলাচলে দেখা দেয় চরম ভোগান্তি। ২০১৮ সালে ১২ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে শুরু হয় ওই সড়কের সংস্কার কাজ। তিনদফা সময় বাড়িয়ে তিন বছরেও শেষ হয়নি খানাখন্দে ভরপুর বেহাল দশার ময়মনসিংহের ত্রিশাল-ফুলবাড়িয়া সংযোগ সড়কের সংস্কার কাজ। এলজিইডি কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতি ও উদাসীনতাকে দায়ী করছেন ভোক্তভোগিরা।
ত্রিশাল উপজেলার বৈলর মোড় থেকে ফুলবাড়িয়া উপজেলা সদরের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। ওই সড়কটি ফুলবাড়িয়া উপজেলা সদরে প্রবেশে ত্রিশালবাসির যোগাযোগ ব্যবস্থাটা যতটা সহজতর করেছে, ততটা সহজতর করেছে ঢাকাগামী ফুলবাড়িয়াবাসির চলাচলে। ওই বিশ কিলোমিটার সড়ক সংষ্কার ও রক্ষানাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)।
ত্রিশালের বৈলর মোড় থেকে ফুলবাড়িয়া উপজেলার সীমানা পর্যন্ত সড়কটির সাড়ে ৫ কিলোমিটার পড়েছে ত্রিশাল উপজেলার অংশে। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে ওই সড়কে অসংখ্য খানাখন্দে পানি জমে অচলাবস্থার সৃষ্টি হলে ২০১৬ সালে সংস্কার কাজের টেন্ডার হয়েও তা বাতিল হয়।
পরবর্তীতে ২০১৮ সালে আবারও সড়কটি পুনঃনির্মানে টেন্ডার হয়। ১২ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কের পুনঃনির্মাণের কাজটি পান মেসার্স ঢালি কন্সট্রাকশনের সত্বাধিকারি নাসিমুল গনি। ওই বছরের ২৬ জুন থেকে ২০১৯ সালের ১৩ আগস্টের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করার কথা থাকলেও ঠিকাদারের অপারগতায় পর পর তিনদফায় সময় বর্ধিত করা হয়। ওই বর্ধিত সময় শেষ হবে এবছরের আগস্টে।
গত তিন বছরেও চলাচলে অনুপযোগি ওই সাড়ে ৫ কিলোমিটারের মধ্যে ৩ কিলোমিটার পরিমান সড়কের সুরকি ফেলে শুধুমাত্র রোলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। ওই দীর্ঘসময়েও সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও এলজিইডি কর্তৃপক্ষের ওপর চরম ক্ষুব্দ স্থানীয় এলাকাবাসি ও ভোক্তভোগি যাত্রীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সাড়ে ৫ কিলোমিটারের মধ্যে ৩ কিলোমিটার পরিমান সড়কের সুরকি ফেলে শুধুমাত্র রোলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এখনো অনেকস্থানে গাইড ওয়াল নির্মানের বাকি। সুরকি ফেলা হয়নি এমন আড়াই কিলোমিটার সড়কজুড়ে অসংখ্য খানাখন্দে হাঁটুসম পানিতে তলিয়ে যাওয়া সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এপথে চলাচলকারী দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষ ও যানবাহন। এসময় স্থানীয়রা, বিদ্যমান অবস্থার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করেন।
আলী আকবর, আবুল কাশেম, ইউনুস আলীসহ স্থানীয়রা বলেন, ৫ বছর ধরে অসহনীয় ভোগান্তির শিকার আমরা। এর শেষ কোথায় জানিনা। তবে এলজিইডি কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতির কারনেই গত তিন বছরেও শেষ হয়নি ত্রিশাল-ফুলবাড়িয়া সড়কের নির্মাণ কাজ।
উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান বলেন, কাজের অগ্রগতির প্রেক্ষিতে এটা পরিস্কার, তৃতীয়দফা সময়ের মধ্যে ওই সড়কের সংস্কার কাজ শেষ করতে পারবেনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। তবে কতদিনের মধ্যে শেষ হবে ওই সড়কের সংস্কার কাজ তা তিনি বলতে পারেননি।