মসিকে দিনে পণ্যবাহী ও বালি ট্রাক লড়ি চলাচল বন্ধ : চলবে না সিএনজি
যানজট নিরসনে মসিকের উদ্যোগে মতবিনিময় সভা
মোঃ কামাল হোসেন :
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ২১ মে এর পরে ইট, বালি ও যেকোন পণ্যবাহী গাড়ি, ট্রাক, লড়ি সকাল ৮ থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ময়মনসিংহ নগরীর অভ্যন্তরে চলাচল করতে পারবে না। এছাড়া, শুক্রবার (১৩ মে) থেকে নগরীর অভ্যন্তরে কোন সিএনজিও প্রবেশ করতে পারবে না।
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেনের আয়োজনে নগরীতে যানজট নিরসন কল্পে করণীয় নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সিটি কর্পোরেশনের শহীদ শাহাব উদ্দিন মিলনায়তনে এই সভা হয়।
সভায় নগরীতে যানজটের প্রধান কারণ ব্যাটারী চালিত অটোবাইক। সভায় অটোবইক ও অটোরিকশা চলাচল নিয়ন্ত্রণে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এজন্য ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সুপারিশ মোতাবেক আগামী ১ জুন থেকে সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত লাল ও নীল রঙের অটোরিকশা ও অটোবাইক চলাচল করবে। এছাড়া যানজট রোধে নগরীর অভ্যন্তরের ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ডকে মাসকান্দায় স্থানান্তরের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। মসিক মেয়র, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী ও পরিবহন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড পরিদর্শন করবেন এবং সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সভার সভাপতি ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু বলেন, ময়মনসিংহে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। বেড়েছে জনসংখ্যা, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে স্কুল কলেজ। এ সমস্ত স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠান ছুটির পর যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এছাড়া সিবিএমসি, নটরডেম কলেজ ও কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস নগরীর মধ্যদিয়ে চলাচলে ক্রমেই অসহনীয় হয়ে উঠছে। এছাড়া নগরীর মধ্য দিয়ে চলমান ৪০টি রেলগেইট সিগনালের কারণে প্রতিদিন ৪০কর্মঘন্টা নষ্ট হচ্ছে। রেললাইন সরানো না হলে আগামী আরো ভয়াবহ হয়ে উঠবে। মেয়র আরো বলেন, নগরীতে থাকা আনন্দ কলেজ, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাকৃবি, মেডিকেল কলেজ সরানো সম্ভব না। তাই রেললাইন সরানো দরকার। ব্রীজের মোড় থেকে বাস টার্মিনাল সরানোর পক্রিয়া চলছে। এছাড়া একটি আধুনিকমানের ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ পরিকল্পনা রয়েছে। শপিংমলগুলোতে গাড়ি পার্কিং নেই, এ জন্য মটর সাইকেল ও গাড়ি রাস্তায় রেখে যানজট আরো ভয়াবহ করে তুলছে।
আমরা যানজটমুক্ত নগরী গড়তে চাই। বহু কারণেই এই শহরে যানজট বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু তা যে কোন মূল্যে নিরসন করতে হবে। নাগরিক জীবনে স্বাচ্ছন্দ আনতে নির্মাণ সামগ্রী রাস্তায় রাখা রোধ, ফুটপাত দখলমুক্তকরণ এবং রাস্তার উপর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ভ্রাম্যমান আদালত কার্যক্রম আরো জোরদার করা হবে বলে মেয়র জানান। এছাড়া পাটগুদাম ব্রীজ মোড় থেকে কেওয়াটখালী পর্যন্ত সড়ক প্রশস্থকরণ (ফোরলেন), নগরীর অভ্যন্তরের সড়কসমূহ প্রশস্থকরণ এবং রেলক্রসিংসমূহে ফ্লাইওভার বা ওভারপাস নির্মাণে সড়ক ও জনপদ বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান মেয়র। সিএনজি নগরীর ভিতর দিয়ে চলাচল নয়। এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় চলাচল রোধ করতে হবে। ৭ হাজার অটো বাইক ও ১২ হাজার রিক্সা পৌর আমলের। দুটি ইউনিয়ন ও আরো চার ইউনিয়নের আংশিক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না।
অনুষ্ঠানে মসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইউসুফ আলী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক, মসিকের সচিব রাজীব কুমার সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মোঃ হাফিজুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মিঞা, সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান, ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন, বিআরটিএ এর সহকারী পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আবু নাসের মোঃ জহির, ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি শংকর সাহা, জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দীন মন্ত, মহাসচিব মাহবুবুর রহমান, সেক্রেটারি সোমনাথ সাহা, ব্যাটারি চালিত অটো মালিক সমিতির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম শাহীন, অটোচালক সমিতির সভাপতি দিলীপ সরকার, সিএনজি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ সহ পুলিশ, বিআরটিএ, সড়ক, বিদ্যুত বিভাগের প্রতিনিধি এবং মোটর মালিক, সিএনজি ও অটোবাইক মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।