স্টাফ রিপোর্টার : হাওয়া ভবন, দুর্নীতি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে খেলা হবে দাবি করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, ডিসেম্বর মাস মহানগর, জেলা, থানা থেকে শুরু করে পাড়া মহল্লা ও রাজপথ দখলে থাকবে আওয়ামীলীগের। সেই লক্ষে সকলকে প্রস্তুতি নিতে হবে। সাজাপ্রাপ্ত টেমস নদীর পাড় লন্ডনে পলাতক তারেক রহমান বিদেশে বসে রাজপথ দখলে রাখার নির্দেশ দিচ্ছে, তোমরা রাজপথ ছাড়বে না। হাসিনা ও তার মন্ত্রীরা পালাবার পথ পাবেনা। মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিন সময়ে রাজনীতি না করার শর্তে মুচলেকা দিয়েছেন। আজ বিদেশে পলাতক অবস্থায় হুংকার দিচ্ছে। তারেক রহমানের সাথে তালমিলিয়ে বাংলাদেশের রহস্য পুরুষ ডঃ কামাল একই কথা বলছেন। সেই নির্দেশে ডিসেম্বরে নয়াপল্টনে রাজপথ দখলে রাখার নামে বিশৃঙ্খলার কৌশল করছে বিএনপি।
মীর্জা ফখরুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, ১০ ডিসেম্বরের আগেই নয়াপল্টনে হাড়ি পাতিল, কয়েল মসারি, কম্বলসহ নানা সম্বল নিয়ে আস্তানা করছেন। এ অর্থ আসে কোথা থেকে। সেই অর্থের উৎস খুজে বের করা হবে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল হয়েছে। আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে। সেই পরিকল্পনা নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা এগিয়ে চলছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের এমপি আরো বলেন, ময়মনসিংহ আজ মিছিলের নগরী, বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের নগরী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নগরীতে পরিণত হয়েছে। নবাব সিরিজ দৌলার পতনের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যায় মীর জাফরের ভুমিকায় খুনি মোস্তাক, ইয়ার লতিফ ছিলেন জিয়া এবং জিয়া ছিলেন মাস্টার মাইন্ড। হাওয়া ভবনের যুবরাজ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তারেক রহমান মাস্টার মাইন্ড। তার নির্দেশে হরকাতুল জিহাদ ও মুফতি হান্নানের নেতৃত্বে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করে। তিনি ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে আরো বলেন, স্বাধীনতার মাস, বিজয়ের মাস এই মাসে রাজপথ থাকবে আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির কাছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর শাখার সম্মেলনে ময়মনসিংহে ওবায়দুল কাদের এমপি ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজ মাঠে শনিবার এ সব কথা বলেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট জহিরুল হক খোকার সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল ও মোহিত উর রহমান শান্তর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, দলে ত্যাগী নেতাদের ঠাই এবং বয়স্কদের মুল্যায়ন করতে হবে। বসন্তের কোকিলদেও চিহিৃত করতে হবে।
সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও কৃষি মন্ত্রী ডঃ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেন, সকল লড়াই সংগ্রামে ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক ভুমিকা রয়েছে। ময়মনসিংহ থেকে যখনই বেশি আসন পেয়েছে তখনই আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসেছে। তাই এই জেলার সম্মেলন অনেক গুরুত্ব বহন করে। আগামী নির্বাচনের আগে দলকে আরো শক্তিশালী ও সুসংগঠিত করে আবারো শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে হবে। তিনি আরো বলেন, অর্থনীতি ও সামাজিকসহ সকলক্ষেত্রে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা পৃথিবীতে আজ নন্দিত। অদম্য বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে একটি মর্যাদাশীল স্থানে নিয়ে যেতে শেখ হাসিনা কাজ করছেন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষা মন্ত্রী ডঃ দীপু মনি এমপি বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং উন্নয়ন দিয়েছে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আগামীতেও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে সকলকে ঐক্য বদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
এছাড়া সম্মেলনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহামদ হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বাবু অসীম কুমার উকিল, কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আক্তার পপি, উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে.এম. খালিদ, এডভোকেট মোঃ মোসলেম উদ্দিন এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ এমপি, ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল এমপি, মিঃ জুয়েল আরেং এমপি, মনিরা সুলতানা মনি এমপি, সিটি মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু বক্তব্য রাখেন।
এর আগে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম। দীর্ঘ ছয় বছর পর ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সার্কিট হাউজ ময়দান সহ সারা নগরীকে সাজানো হয় ভিন্ন আঙ্গিকে। নগর ছেয়ে গেছে রঙবেরঙের ব্যানার, ফেস্টুন আর পোস্টারে। নগরীর প্রতিটি রাস্তাসহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ময়মনসিংহ সীমান্ত ভালুকা পর্যন্ত শত শত গেইট, তোরণ দিয়ে সাজিয়ে জানানো হয়েছে অভ্যর্থনা। সম্মেলনকে সফল করতে জেলার ১৩ টি উপজেলা থেকে শত শত বাস, ট্রাক, মিনিবাস, পালকি, বড়বিলা, সিএনজিযোগে হাজার হাজার নেতাকর্মী, কাউন্সিলর, ডেলিগেটর যোগদান করে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং সম্মেলনের আগে পরে সকল ধরনের নাশকতা রোধে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের কৌশলী ওসি শাহ কামাল আকন্দের নেতৃত্বে থানা, ডিবি পুলিশ কঠোর নজরদারি ও নিরাপত্তার উদ্যোগ নেয়। এছাড়া র্যাব সহ সাদা পোষাকধারী পুলিশ সদস্যরা সারা নগরীতে নজরদারী চালায়। জেলা পুলিশ এ সব নিরাপত্তা তদারকি করেন বলে কোতোয়ালি পুলিশ জানায়।