স্বজন ডেস্ক : কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালীর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বালুখালী ১১ নম্বর ক্যাম্পে লাগা আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে পাশের ৯ ও ১০ নম্বর ক্যাম্পেও। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয়েছে কক্সবাজারের চারটি দমকল বাহিনীর ৯ ইউনিটকে। এতে তিন ক্যাম্পে প্রায় দুই হাজার ঘর ভস্মীভূত হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ঘরে ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার থাকায় আগুন বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে আগুন ছড়িয়ে থাকায় নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়।
রোববার (৫ মার্চ) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ক্যাম্পের ডি-১৫ ব্লকের একটি ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সময় লেগেছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে। এমনটি জানিয়েছেন কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, বিকেল ৩টা থেকে লাগা আগুন সন্ধ্যা ৬টার দিকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। যে এলাকায় আগুন লেগেছে সেখানে অতিশয় ঘনবসতি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী ও ফায়ার সার্ভিসের চারটি অফিসের ৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়।
এদিকে, ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু সুফিয়ানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। খতিয়ে দেখছে সংশ্লিষ্ট সিআইসি অফিসও। গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশে আসা রোহিঙ্গাদের বিশ্ব খাদ্য প্রকল্প শুকনা ও রান্না করা খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করছে।
শরণার্থী কমিশনার কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২১ সালের ২২ মার্চ উখিয়ার বালুখালী এলাকার তিনটি (ক্যাম্প-৮, ৯ ও ১১) ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। ওই অগ্নিকাণ্ডে ১০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বসতি পুড়ে ছাই হয়। গৃহহীন হয়েছিল ৪৫ হাজার রোহিঙ্গা। অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে মারা যায় ছয় শিশুসহ ১৫ রোহিঙ্গা। ওই আগুনের সূত্রপাত কোথা থেকে তা এখনো জানা যায়নি।
বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্পে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। এর মধ্যে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেন আট লাখ রোহিঙ্গা।