ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
ময়মনসিংহের ত্রিশালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চেলেরঘাট নামকস্থানে খিরু নদীর ওপর আশির দশকে নির্মিত বেইলি ব্রিজটি ভেঙে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারবাহী একটি ৪২ চাকার লড়ি ও প্রাইভেটকার নদীতে পড়ে যায়। বুধবার বিকেলে ঘটে ওই ঘটনা। দুর্ঘটনায় প্রাইভেটকারের চারজন আহত হন।
জানা যায়, বুধবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে আশির দশকে চেলেরঘাট নামকস্থানে খিরু নদীর ওপর নির্মিত বেইলি ব্রিজটির মাঝ বরাবর ভেঙে, ময়মনসিংহের কেওয়াটখালী বিদ্যুৎ গ্রিডের ট্রান্সফরমারবাহী একটি ৪২ চাকার লড়ি ও প্রাইভেটকার নদীতে পড়ে যায়। বিকট শব্দে ছুটে আসেন আশপাশের লোকজন। খবর পেয়ে ত্রিশাল থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পৌছেন ঘটনাস্থলে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুর্ঘটনায় কেউ নিহত হননি। তবে প্রাইভেটকারের থাকা ঢাকা কুড়িলের কুড়াতলার মিলন শিকদার (৩০), মনির (৩০), পারভেজ (৩৯) ও জাকির হোসেন (৩০)সহ চারজন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় লড়ি চালক। এদিকে এসময় চার লেনের মহাসড়কের দুই লেন বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজট দেখা দেয়। পরে ত্রিশাল থানা পুলিশের চেষ্টায় যানজট নিরসন হয়।
দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার শফিকুর রেজা বিশ্বাস, ইউএনও জুয়েল আহমেদ, সহকারী কমিশনার (ভুমি) হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বশীলরা ওই বেইলি ব্রিজটি কত সালে নির্মিত তা জানাতে না পারলেও স্থানীয় ব্যবসায়ি তোতা মিয়া, সাবেক ইউপি সদস্য আবুল কালাম ও সাবেক ইউপি নারী সদস্য হনুফা আক্তারসহ অন্যান্যরা জানান, খিরু নদীর ওপর নির্মাণকাজ শেষে ১৯৮৯ সালে এই বেইলি ব্রিজটি উদ্বোধন করেছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ। ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেনে উন্নতি হওয়ার সময় পাশেই একটি নতুন ব্রিজ নির্মিত হলেও পুরাতন এই ব্রিজটি ভেঙে এরস্থলে নতুন ব্রিজ নির্মাণ হয়নি।
ত্রিশাল ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার আবুল কালাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, আহত কারো অবস্থা আশংকাজনক ছিলনা। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ওসি মাইন উদ্দিন জানান, যানজট স্বাভাবিক হয়েছে, ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে উদ্ধার তৎপরতায় কাজ করছে পুলিশ।
দুর্ঘটনা কবলিত বেইলি ব্রিজটি মেয়াদ উত্তীর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল কিনা জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কেবিএম সাদ্দাম হোসেন বলেন, এমনটা নয়, তবে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারসহ একশ টনের অধিক ওজন ছিল বাহনটি। সেই লোড নিতে না পারায় ব্রিজটি ভেঙেছে। বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃপক্ষ সওজের কোনপ্রকার অনুমতি ছাড়াই এধরনের ভারি মালামাল আনা নেয়া করে।