ইউপি নির্বাচনে সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে ফুলবাড়িয়ায় নৌকার প্রচার অফিস ভাংচুর

প্রকাশিত: ৭:২৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১, ২০২১

ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় আগামী ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসছে নৌকা-স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রচারনায় সংঘর্ষ, প্রচার কেন্দ্র ভাংচুরের ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

রোববার (৩১ অক্টোবর) রাতে আছিম-পাটুলী ইউনিয়নের ঘুঘুরচালা চৌরাস্তা মোড়ে ও লাঙ্গলশিমুল বাজারে নৌকা প্রতিকের প্রচার কেন্দ্র ( অফিস) ভাংচুর করেছে স্বতন্ত্র প্রার্থী ( চশমা প্রতিক) ইমরুল কায়েশের লোকজন। এ ঘটনায় সোমবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন নৌকার প্রার্থী এস এম সাইফুজ্জামান। একই রাতে অপর এক ঘটনায় এনায়েতপুর ইউনিয়নের দোলমা সাপমারা এলাকায় নৌকার সমর্থকরা স্বতন্ত্র ( ঘোড়া) প্রার্থীর প্রচার কেন্দ্র অফিসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে এমন অভিযোগ করেছেন স্বতত্র প্রার্থী কবীর হোসেন। এ ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর আহত কর্মী মিজানকে মচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

নৌকার প্রার্থী বুলবুল হোসেন পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে শুরু থেকেই একটা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে স্বতন্ত্র প্রার্থী কবীর হোসেন। এটা কোন বিশ্বাসযোগ্য কথা তার বাড়ির পাশে নির্বাচনী কেন্দ্রে আমি ভাঙচুর করব তার কর্মীদের আমি পেটাবো বরং আমি নিজেই ঘটনার পর সেখানে গিয়ে দেখে এসেছি পরিস্থিতি এটি একটি পরিকল্পিত হামলা।

এনায়েতপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী ( (ঘোড়া) কবীর হোসেন বলেন, আমার লোকজনকে রাতে প্রচার অফিসে নৌকার লোকজন প্রতিদিন হামলা চালিয়ে আহত করছে , অফিস ভাংচুর করছে । এমন হলে নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠ হবে কি ভাবে।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানাযায়, উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ইউনিয়নে ৫টি যার মধ্যে এনায়েতপুর, নওগাঁও, বাকতা,পুটিজানা , কালাদহ ও আছিম –পাটুলী ইউনিয়ন।

নাওগাঁও ইউনিয়নের সন্তোষপুর কান্দুর বাজারে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস মার্কার মোজাম্মেল হোসেন মোজার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ৫ থেকে ৬ জন আহত হয়েছে। শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) বিকেল ৪ টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষের আহতদের মধ্যে গোলাপ হোসেন ও মাওলানা আঃ হাকিম, হাবিবুর রহমান, সুলতান আহমেদের নাম জানা গেছে। আহতদের ফুলবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মচিম হায় ভর্তি করা হয়েছে। পরদিন স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতিকের পোষ্টার ছিরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে নৌকার সমর্থকরা বলে অভিযোগ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোজাম্মেল হক।

আওয়ামী লীগের নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক জানান, নৌকার নির্বাচনী প্রচার অফিস ভাংচুরের ঘটনায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তারা আমার দুই কর্মীকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মোজাম্মেল হোসেন মোজা জানান, আমাদের নির্বাচনী প্রচার অফিস করতে না দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্র্ষের ঘটনা ঘটেছে। আহতদের মধ্যে আমার এক কর্মীর মাথায় গুরুতর আঘাত ও অপর দুই কর্মীর হাত ভেঙ্গে ফেলেছে। আমি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি।

ফুলবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোল্লা জাকির হোসেন জানান, নাওগাঁও ইউনিয়নের কান্দুরবাজারে নির্বাচনী সংঘর্ষের ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনেছি। যারা সহিংসতার ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল সিদ্দিক বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়নের নির্বাচনী সহিংসতার অভিযোগে ঐ সব ইউনিয়ন ঘুরে এসেছি এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করেছি। পরবর্তীতে এ ধরনের অভিযোগ পেলে প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।