এইচএসসি’র ফরম পূরণের টাকা ফেরতের দাবিতে গৌরীপুর মহিলা ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত

প্রকাশিত: ৭:২০ অপরাহ্ণ, জুন ১৬, ২০২১

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
ময়মনসিংহের গৌরীপুর মহিলা ডিগ্রী (অনার্স) কলেজে ২০২০সালে এইচএসসি ৩৭৩জন পরীক্ষার্থীর ফেরত টাকা কর্তনবিহীন ফেরতের দাবিতে বুধবার (১৬জুন/২০২১) আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। সকালে তারা কলেজ অবস্থান কর্মসূচী শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান মারুফ এর নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে ২০২০ ফরম পূরণের টাকা ফেরত ও কলেজের যাবতীয় দুর্নীতি বন্ধের দাবি জানান। গত মঙ্গলবার থেকে পুরো টাকা ফেরতের দাবিতে শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলন শুরু করে।


ইউএনও স্মারকলিপি প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে এ প্রতিনিধিকে বলেন, কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন এ ফান্ডের টাকা করোনাকালীন সময়ে অন্যখাতে খরচ হয়ে গেছে। পরবর্তীতে দিয়ে দিবেন।

এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন টাকা দেয়া হচ্ছে ৪৮০ আর স্বাক্ষর নিচ্ছেন ১হাজার ৬৫টাকার কলামে। নুসরাত জাহান লিটা জানান, স্বাক্ষর দিতে কেউ অনিচ্ছা প্রকাশ করলে কলেজের হিসার রক্ষক আশিকুর রহমান খান টিটু স্যার আমাদেরকে ধমক দিয়ে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করছেন।

হিসাব রক্ষক আশিকুর রহমান খান টিটু সাংবাদিকদের জানান, কারো সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়নি। আমাকে যেটাকা দেয়া হয়েছে, সেই টাকা বিতরণ করছি। বাকী টাকা পরে দেয়া হবে। কলেজের প্রধান অফিস সহকারী শহীদুল্লাহ হুমায়ুন সাংবাদিকদের বলেন, কলেজে কোন টাকা লুটপাট হয়নি। লুটপাট নিয়ে কিছু লিখলে ডিজিটাল আইনও আছে!

অপরদিকে শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন দুই বছর অধ্যয়নকালেও তাদের নিকট থেকে নানা অজুহাতে অতিরিক্ত অর্থ নেয়া হয়েছে। কম্পিউটার ল্যাব, লাইব্রেরী ফি, বার্ষিক ক্রীড়া ফি, মিলাদ ও পূজা ফিসহ এসব খাতে বছরের পর বছর চাঁদা দিয়েও আমরা কোন সেবা পাইনি। শিক্ষার্থীদের জন্য কম্পিউটার ল্যাবে প্রবেশ সবসময় ছিলো নিষিদ্ধ। তারা আরো অভিযোগ করেন, টাকা না দিলে ব্যবহারিক পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষার নামেও অতিরিক্ত অর্থ নেয়া হয়েছে। সমুদয় টাকা ফেরতের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের পরেও বুধবার পুরো টাকা দেয়া হয়নি। ফলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা টাকা না নিয়ে শূন্যহাতে বাড়ি ফিরেছেন।

শিক্ষা বোর্ডের সিদ্ধান্তনুযায়ী বিজ্ঞান বিভাগের নিয়মিত একজন শিার্থী সর্বমোট ১ হাজার ৬৫ টাকা ফেরত পাবেন। এর মধ্যে শিাবোর্ড দেবে ৪৮০ টাকা, কেন্দ্র দেবে ২২৫ টাকা। আট বিষয়ের ব্যবহারিকে ৪৫ টাকা করে মোট ৩৬০ টাকা। মানবিক ও ব্যবসা শিা শাখায় একজন নিয়মিত শিার্থী পাবেন মোট ৬২৫ টাকা। মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী জিমি ও মিম জানায়, তাদেরকে ৪শ টাকা করে দেয়া হয়েছে। তবে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে ৬২৫টাকায়। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করেও তারা কোন সুফল পাননি।

এ প্রসঙ্গে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের সচিব প্রফেসর কিরীট কুমার দত্তের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি। বোর্ডের প্রশাসনকি শাখা থেকে জানানো হয়, পুরো টাকা না দিয়ে স্বাক্ষর নেয়ার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কলেজ গভর্ণিং বডির সভাপতি ম. নূরুল ইসলাম জানান, এ বিষয়টি তিনি অবগত নন।

এইচএসসি ফরম ফিলাপে অতিরিক্ত ফিসহ অন্যান্য বিষয়টি অস্বীকার করেন কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিন। তিনি বলেন, ব্যবহারিক পরীক্ষার ফিস ও কেন্দ্র ফির টাকা খরচ হয়ে গেছে। কলেজের ফান্ডের টাকা নাই। পরবর্তীতে দিয়ে দেয়া হবে।