মোঃ রইছ উদ্দিন :
আজকের কন্যাটি এক সময় নানা পরিচয়ে বেড়ে উঠে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তর আর বংশপরাক্রমে কখনও সে মেয়ে, এক সময় মা আবার নানী-দাদী, বড়মা (মায়ের নানী) পরিচয়ে এ সমাজকে বাঁচিয়ে রাখছেন। এমন পাঁচ প্রজন্মের কন্যা রয়েছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের ঘোষপাড়ায় সুখাচ্ছন্নেই আছেন প্রবীণ বকুল রানী ঘোষ।
জীবনযুদ্ধের শেষপ্রান্তে এসেও হাস্যজ্জ্বল বকুল রানী ঘোষ। বয়স আশি’র কৌটায় ছুঁইছুই করছে। তারপরেও তিনি তারুণ্যদীপ্তের ন্যায় প্রতিদিনের রান্না থেকে শুরু করে সর্বত্র বিচরণের সামর্থ্য রাখেন। নাতী’র ঘরের পুতিদের নিয়ে এখনও বিদ্যালয়ে নিয়মিত হাজির হন তিনি। তাঁর বাবার নাম ঈশ্বর চন্দ্র ঘোষ। বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা হোগলায়। বারো বছর বয়সে বিয়ে হয় গৌরীপুর পৌর শহরের ঘোষপাড়ায় জীতেন্দ্র চন্দ্র ঘোষের সঙ্গে। মাতৃত্বের প্রথম স্বাদ গ্রহণ করেন বিয়ের মাত্র ৩বছর বয়সে। সেই কন্যার নাম জোৎস্না রানী ঘোষ। বিয়ের ৬বছরে দ্বিতীয় কন্যার মা হন। পতি হারান দাম্পত্য জীবনের একযুগ অতিক্রমের পরেই। দু’কন্যাকে নিয়ে শুরু হয় জীবনের পথচলা। তাদেরকে নিয়ে পাড়ি দিয়েছেন আরো ৫২টি বছর।
তারই কন্যা জোৎস্না রানী’র বিয়ে হয় নন্দ দুলাল ঘোষের সঙ্গে। এ সংসারে রয়েছে কন্যা রীনা রানী ঘোষ ও দু’পুত্র শংকর ঘোষ পিলু ও শ্যামল ঘোষ। রীনা রানী ঘোষের বিয়ে হয় নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুরের নিমাই চন্দ্র ঘোষের সঙ্গে। রীনা রানীর বয়স ৪০’র কৌটা ছাড়িয়েছে। এ দম্পতি’র কন্যা স্বর্ণা রানী ঘোষ (২৫) ও পুত্র নিলয় চন্দ্র ঘোষ। স্বর্ণা রানী ঘোষের বিয়ে ২০১৫সালে। তাদের বড় মেয়ের নাম লগ্নতা ঘোষ (৩) ও ছোট মেয়ে শ্রীজিতা ঘোষ (৭মাস)।
জাতীয় কন্যা দিবসের কথা শোনে চমকে যান পঞ্চপ্রজন্মের সেই বকুল রানী। এই প্রথম তিনি শোনলেন; কন্যা দিবস! তিনি বলেন, দু’কন্যাকে নিয়ে আমি পাঁচযুগ পাড়ি দিয়েছি। কন্যা’রা আর্শীবাদ। এই দিবসে তিনি সকল কন্যাদের প্রতি শুভেচ্ছাও জানান।
মায়ের সুখাচ্ছন্ন দেখে অভিভূত হন তার কন্যা জোৎস্না রানীও। তিনি বলেন, মা-মা’ই, তিনি সঙ্গে আছেন বলেই মনে হয় পৃথিবীটা এখনও আমার আছে। আমি মা, আমার মা, আমার মেয়ে এখন মা, আমার নাতীও এখন মা। সত্যিই বিস্মৃত! এটা প্রভু’র আর্শীবাদ।