কলিহাসান,দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি:
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের জাগিরপাড়া গ্রাম থেকে সোমবার সকালে মিনি বাস চুরির ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে দুজনকে আটক করেছে থানা পুলিশ। মঙলবার দুপুরে বিজ্ঞ আদালত ওই দুই অভিযুক্তকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
মিনিবাস চুরির সন্ধান পেয়ে ঢাকাস্থ তেজগাঁও এলাকার আব্দুল মজিদের পুত্র মালিক আলী আজম দুর্গাপুর থানায় আসেন। পরে মালিককে সাথে নিয়ে পুলিশের এস আই রুকন ঘটনাস্থলে গিয়ে মিনিবাসটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় গত (২৭ মার্চ) শ্রীপুর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন আলী আজম। ভুক্তভোগী আলী আজম এর একটি মাত্র মিনিবাস ছিল। সেটি ভাড়া থেকে যা আসতো,তা দিয়ে সংসার চলতো। বেঁচে থাকার সম্ভল হারিয়ে বারবার কান্না করছিলেন তিনি।
গ্রেপ্তারকৃত সুরুজ্জামান (৩০) ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার বালুর ঘাট এলাকার মুসলীম উদ্দিনের ছেলে,আর রিয়াজ উদ্দিন(২২)গাজীপুর জেলার শ্রীপুর গ্রামের টেপির বাড়ি এলাকার ভাড়াটিয়া বাসায় থাকতেন। সে ওই গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে।
গত শুক্রবার (২৬ মার্চ) ভোর ৪টার দিকে মাওনা গ্যাস পাম্প থেকে চুরি হয়ে যায়। ওই দুজন অভিযুক্ত ব্যক্তি স্থানীয় ভাঙারি ব্যবসায়ী সুরুজ এর সহায়তায় ঘটনার পর দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাগিরপাড়া গ্রামে নিয়ে আসে। ইউপি মেম্বার মোহাম্মাদ আলীর বাড়ি থেকে বিদ্যুত সংযোগ এনে মিনি বাসটিকে কেটে টুকরো টুকরো করে সুরুজ আলী। মিনিবাস চুরির ঘটনায় সংশ্লিস্ট ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলীও জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, গত ২৭ মার্চ সকালে জাগিরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অবস্থান করে। পরে ভাঙারি ব্যবসায়ী সুরুজ আলী স্কুল মাঠ থেকে মেম্বারের বাড়ির দক্ষিণ দিকে ফাঁকা জায়গাতে মিনিবাসটি কাটতে শুরু করে। এ ঘটনাটি স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের সন্দেহ হলে ইউপি চেয়ারম্যান খবর পেয়ে গ্রাম্য পুলিশ দিয়ে বাসটি কাটতে নিষেধ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গাঁওকান্দিয়া বাজার থেকে অভিযুক্ত দুজনকে আটক করে। চটকে পড়ে ভাঙারি ব্যবসায়ী সুরুজ আলী। অনেকটা গাঁ ডাকা দেন ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী।
সোমবার বিকেলে স্থানীয় ইউপি মেম্বার মিনিবাস চুরির সাথে সম্পৃক্তা থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মুসলমান বিন্দু মাত্র মিথ্যা বলছি না, এ ঘটনার সাথে আমি কোনভাবেই জড়িত না। মিনি বাসটি চুরির জানলে বিদ্যুত সংযোগ দিতাম না। তবে ভাঙারি সুরুজ এর সাথে এ বিষয়ে কি কথা হয়েছে সবকিছুই আমার কাছে রেকর্ড রয়েছে।
পলাতক ভাঙারি সুরুজের বাড়িতে গেলে স্ত্রী রেজিয়া এ ঘটনার সাথে ইউপি মেম্বার জড়িত আছেন বলে জানান। সোমবার বিকেলে সুরুজ এর বড়ি থেকে একটি ব্যাটারী ও এঙ্গেল, বাসের অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করে নিয়ে আসে পুলিশ।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মোতালেব জানান, ঘটনাটি এলাকার মানুষের মাঝে সন্দেহ তৈরী হলে পুলিশে খবর দেয়া হয়। পুলিশ তদন্ত করে এর সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে দুজনকে আটক করেছে। এ মিনিবাস চুরির সাথে যারা জড়িত তাঁদেরকে আইনের আওতায় আনা উচিত। এটি এলাকার জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহনুর-এ আলম জানান, মিনিবাস চুরি করে কে বা কাহারা ওই এলাকায় এনেছে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাটাই। ইতিমধ্যে দুজনকে আটক করে কোর্টের মাধ্যমে ৫৪ ধারায় জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মিনিবাসটি মালিক এসেছিলেন। চুরির ঘটনাস্থল শ্রীপুর মডেল থানার আওতায় হওয়ায় তাৎক্ষণিত ভাবে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছিনা। তবে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।