সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), ময়মনসিংহ সদর এর উদ্যোগে ১৩ এপ্রিল ২০২১, মঙ্গলবার বেলা ১১:১৫টায় ময়মনসিংহ সদর উপজেলা শিক্ষা কর্তৃপক্ষের সাথে জুম অন লাইন মাধ্যমে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার জীবন আরা বেগম।
সনাক সদস্য অধ্যাপক যামিনী কান্ত সরকার এর সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সনাক সদস্য অধ্যাপক বিমল কৃষ্ণ দাস। অন্যান্যের মধ্যে ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় করোনা সংকটে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা, মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতা ও উত্তরণ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাহিদা পারভীন, হাবিবা সুলতানা, শ্রীবাস চন্দ্র পাল, কবিতা নন্দী পাপড়ি প্রমূখ।
টিআইবি’র এরিয়া ম্যানেজার মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান এর সঞ্চালনায় সভায় করোনা সংকটে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক চিত্র, প্রতিবদ্ধকতা ও করণীয় শীর্ষক ভার্চুয়াল সভায় বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
উল্লেখযোগ্য সুপারিশসমূহের মধ্যে প্রান্তিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী- যাদের টেলিভিশন ও ইন্টারনেট সুবিধা নাই এবং বিদ্যুৎ সংযোগ নেই বা বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেও লোড শেডিং ও অন্যান্য কারিগরি সমস্যাজনিত কারণে “সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন” এ সম্প্রচারিত সাপ্তাহিক পাঠদান ‘ঘরে বসে শিখি’র মাধ্যমে পাঠগ্রহণের সুযোগ কম- তাদের পাঠদান নিশ্চিতের ব্যবস্থা করা; বিদ্যালয়ভিত্তিক শিক্ষকগণ নিজেদের মধ্যে আন্ত:যোগাযোগ ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের সুবিধার্থে প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে (এডমিন) অফিসিয়াল ফেসবুক আইডি খোলে কাশ অব্যাহত রাখা, প্রতিদিন দিনের সুবিধাজনক সময়ে প্রধান শিক্ষক অন্যান্য শিক্ষকগণের সাথে মেসেঞ্জারে মতবিনিময় সভা আয়োজন করা; শিক্ষকগণ( কাস শিক্ষক) প্রতিদিন আন্তরিকার সহিত অন্তত: ১০ জন শিক্ষার্থীর সাথে (অভিভাবকদের মোবাইলে) যোগাযোগ, লেখাপাড়র খোঁজ খবর, সপ্তাহের সুবিধাজনক দিনে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা, তাদের স্বাস্থ’্যগত দিক, সমস্যাসহ কথা বলা এবং তা লিখিতভাবে সংরক্ষণ করা; ইন্সট্রাক্টর/সহকারী ইন্সট্রাক্টরগণ শিক্ষকগণের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে ভার্চুয়াল প্রশিক্ষণের আয়োজন করা ইত্যাদি।
এছাড়া বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণসমূহ ডিজিটাল পদ্ধতিতে আয়োজন করা যেতে পারে; প্রশিক্ষণ শেষে শিক্ষকগণ একই পদ্ধতিতে সম্ভাব্য শিক্ষার্থীদের ভার্চুয়াল কাস গ্রহণ করতে পারেন; করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করতে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা অত্যাবশ্যক। স্কুল ফিডিং কর্মসূচি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। স্কুলের সকল শিক্ষার্থীকে পুস্টিকর বিস্কুট সরবরাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন ও অবকাঠামো উন্নয়নে বরাদ্দকৃত তহবিলসহ স্লিপ ফান্ড এর ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে নাগরিক অংশগ্রহণের সুযোগ ও যাবতীয় তথ্য উন্মুক্ত করা যেতে পারে।
উক্ত ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাজমা খাতুন, স.উ. ও. মোসা: শাহানা মাকছুদা দিপা, মেরিনা সুলতানা, নিগার আবেদিনসহ সম্মানিত সনাক সদস্য, স্বজন সদস্য ও টিআইবি’র প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার জীবন আরা বেগম বলেন, করোনাকালীন সময়ে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত উন্নয়নে সনাক’র পক্ষ হতে যেসকল সুপারিশমালা প্রদান করা হয়েছে উপজেলা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ এগুলো অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে দেখছে। ইতিমধ্যে এর অনেকগুলি বাস্তবায়নও হয়েছে। তিনি করোনা অতিমারিতে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার, প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকগণের নিরলসভাবে দায়িত্বপালনের প্রশংসা করেন।
এই অতিমারিতেও তাঁরা নিয়মিত বিদ্যালয় মনিটরিং করা, উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড দেখবাল, শিক্ষগণের সাথে যোগাযোগ রক্ষা, এসএমসির ও অভিভাকদের সাথে সমন্বয়, উপবৃত্তি বিতরণ কার্যক্রম তদারকি, সহকারি শিক্ষকগণের পাঠদান অগ্রগতি তদারকিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
সভার সমাপণী বক্তব্যে সভার সভাপতি সনাক সদস্য অধ্যাপক যামিনী কান্ত সরকার উপজেলা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ কে ধন্যবাদ জানিয়ে ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি