নান্দাইল আঞ্চলিক অফিস :
ময়মনসিংহের নান্দাইলে জমি দখল, হামলা ও মারধর সহ নানানভাবে মাওলানা হারুনুর রশিদ (৪১) নামে এক ব্যক্তিকে হয়রানি ও অত্যাচার করার অভিযোগ উঠছে। এ নিয়ে গ্রামে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ প্রায় ৫০টির অধিক সালিশ দরবার করলেও প্রতিপক্ষ হাসিম উদ্দিনের (৪৫) অত্যাচার থেকে তিনি নিস্তার পাচ্ছেন না। উপজেলার খারুয়া ইউনিয়নের কাকুরিয়া গ্রামের ঘটনা এটি। এ ব্যাপারে মাওলানা হারুনুর রশিদ স্থানীয সাংবাদিকদের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক -এর) প্রশিক্ষক ও স্থানীয় খারুয়া ইউনিয়ন ইমাম- উলামা পরিষদের সহ-সভাপতি মাওলানা হারুনুর রশিদকে হয়রানিসহ নাজেহাল করার ঘটনায় ১১ নং খারুয়া ইউনিয়ন ইমাম – উলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা কাজী আব্দুস সাত্তার ও সাধারণ সম্পাদক মুফতি খাদিমুল ইসলাম এক যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে তাঁরা ঘটনাটির নিন্দা জানান এবং এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
মাওলানা হারুনুর রশিদ সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবেশি মৃত মফিজ উদ্দিনের পুত্র মো. হাসিম উদ্দিন (৪৫) দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্নভাবে তাকে হয়রানি ও নির্যাতন করে আসছে। তিনি আরও বলেন, আমার কোন ভাই নেই। তাছাড়া কর্মসূত্রে বাড়ির বাহিরে থাকতে হয় আমাকে। এ সুযোগে আমার বসত ঘর লাগোয়া প্রায় ৫ শতাংশ জমি দখল করে পুকুর খনন করেছে প্রতিপক্ষ। এর প্রতিবাদ করায় গত ২৭ জুলাই (মঙ্গলবার) সকালে হাসিম উদ্দিন ও তার দুই ছেলে মো.জুনাইদ (২৭) ও সাইফুল ইসলাম (২৫) অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে এবং হাসিম উদ্দিনের স্ত্রী রানু বেগম আমার উপর হামলা চালায় এবং আমাকে মারধর করে আহত করে। এরপর আমি গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছি।
বর্তমানে তার কারণে আমি আমার জমিজমা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারছি না। যার কাছেই বিক্রি করতে যাই হাসিম উদ্দিন গিয়ে বাঁধা দেয়।
মাওলানা হারুনুর রশিদ আক্ষেপ করে বলেন, খারুয়া ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান সহ এলাকাবাসী প্রায় ৫০টির বেশি সালিশ দরবার করলেও আমি শেষ পর্যন্ত কোন সুফল পাইনি। প্রতিবারই সালিশ দরবারে আমার পক্ষে রায় হয়। লিখিত রায় মেনে নিয়ে পরবর্তীতে হাসিম উদ্দিন তা আর মানে না। উল্টো আমার জমির গাছপালা কেটে নিয়ে যায়।
হাসিম উদ্দিনের বাড়িতে গেলে তার পুত্রবধূ মিথিনা সুলতানা জানান তিনি বাড়িতে নেই। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে হাসিম উদ্দিন বলেন,
মাওলানা হারুনুর রশিদ ও আমি একই বংশের। সম্পর্কে আমরা চাচাতো ভাই। তাকে হয়রানি ও অত্যাচারের অভিযোগ তিনি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, তার সাথে আমার জমি সংক্রান্ত বিরোধ আছে। তবে কোন দুঃসম্পর্ক নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় খারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসনাত ভূঁইয়া মিন্টু বলেন, সম্পত্তি সংক্রান্ত তাদের এই বিরোধ দীর্ঘদিন ধরে। তিনি বলেন, আপাতত উভয় পক্ষকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে থাকতে বলেছি। আগামী অগ্রহায়ণ মাসে শুকনো মৌসুমে তাদের বিরোধপূর্ণ জমি মাপজোপ করে একটি সুন্দর সমাধান করে দেওয়া হবে।