গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা : ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে পল্লী বিদ্যুতের খুঁিটর নীচে চাপা পড়ে বৃদ্ধ প্রতিবন্ধী আছর উদ্দিনের (৬৮) নিহতের ঘটনায় দুইলাখ টাকায় রফাদফা হয়েছে। পরে সোমবার রাত ৯টায় নিহতের লাশ দাফন করা হয়েছে।
বৃদ্ধ প্রতিবন্ধী আছর উদ্দিনের নিহত হওয়ার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (ভালুকা)-২, গফরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এক শ্রণীর কর্মকর্তা, কর্মচারী, ঠিকাদার এবং স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল ঘটনার পর থেকেই তৎপর হয়ে উঠে। তারা একজোট হয়ে হতদরিদ্র নিহতের পরবিারকে নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখাতে শুরু করে।
জানা গেছে, নির্মানাধীন ভালুকা-গফরগাঁও-খুরশীদমহল ব্রীজ সড়কে হাটুরিয়া মোড় থেকে ৪ কিলোমিটার পল্লী বিদ্যুতের নতুন সঞ্চালন লাইন নির্মানের কাজ চলছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মাহির এন্টারপ্রাইজ কাজটি করছে। রবিবার বিকাল বেলায় ওই এলাকায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বেশ কয়েকটি খুটি স্থপন করে। খুটিগুলো মাত্র দেড় ফুট থেকে দুই ফুট গর্ত করে স্থাপন করা হয়। টেন্ডারের শর্ত অনুযায়ি খুঁিটগুলো কমপক্ষে ৬ ফুট গর্ত করে স্থাপন করার কথা। এলাকাবাসী কম গর্ত করে খুটিঁগুলো স্থাপন নিয়ে প্রশ্ন তুললে গফরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ অফিস কেন্দ্রিক ঠিকাদারের লোকজন এলাকাবাসীকে ভয়ভীতি দেখায়।
সোমবার সকাল ১০ টার দিকে প্রতিবন্ধি আছর উদ্দিন গরু নিয়ে ওই খুটির সামনে দিয়ে মাঠে যাওয়ার সময় হুড়মুড়িয়ে বিদ্যুতের খুটি তার শরীরের উপর পড়ে। এতে খুঁিটর নীচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই আছর উদ্দিন নিহত হন। থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি ক্রেইন জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
বিকাল থেকে পল্লী বিদ্যুতের লোকজন, ঠিকাদার ও স্থানীয় প্রভাবশালী মহল দেন দরবার করে বৃদ্ধ আছর উদ্দিনের লাশের মূল্য নির্ধারন করে দুই লাখ টাকা। তারপর নিহতের পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে তিন’শ টাকার ষ্ট্যাম্পে আপোষ নামার সই আদায় করে নেয়। পরে এই ষ্ট্যাম্প থানায় জমা দিয়ে লাশ দাফন করে।
নিহতের ছেলে শাহাবুদ্দিন (৪৪) ও জামাল (৩০) এ বিষয়ে কোন ধরনের কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করে।
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (ভালুকা)-২, এর এজিএম ( ইএন্ডসি) মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, এ বিষয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত রির্পোট পাওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে। মামলার বিষয়টি থানা পুলিশ জানে।
গফরগাঁও থানার ওসি ফারুক আহম্মেদ বলেন, নিহতের পরিবার স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি ও পল্লীবিদ্যুতের লোকজনকে সাথে নিয়ে এসে আপোষনামা দেওয়ায় থানায় মামলা হয়নি।