রফিক বিশ্বাস, তারাকান্দা (ময়মনসিংহ) :
ময়মনসিংহের তারাকান্দা – শ্যামগঞ্জ সড়কের তারাকান্দা অংশের প্রায় ১১ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে বেশির ভাগই ভাঙাচোরা। এ সড়কের পিচ ও খোয়া উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোটবড় অনেক গর্তের । ফলে এ সড়কে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছে যানবাহন ও পথচারীরা। ছোটবড় গর্তে সড়কটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে দেখা যায়, তারাকান্দা উপজেলার রামপুর, গালাগাঁও, কামারিয়া ইউনিয়নের অন্তত ৩০টি গ্রামের এবং পূর্বধলা ও গৌরীপুর উপজেল ১০টি গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার অর্ধলক্ষাধিক মানুষ এ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করেন। দুই উপজেলার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী সড়কও এটি। যাতায়াতের বিকল্প কোনো পথ না থাকায় বাধ্য হয়ে এ সড়ক দিয়েই চলাচল করতে হয় স্থানীয়দের। এমনকি নানা সময়ে রোগী নিয়েও এ সড়ক দিয়েই আসা-যাওয়া করতে হয়। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের সমস্যা হয় বেশি।
তারাকান্দা বাজারের ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এ সড়ক দিয়ে বিভিন্ন হাটের ব্যবসায়ীরা পণ্য আনা-নেওয়া করে থাকেন। কিন্তু সড়কটি বেহালের কারণে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি যানবাহন চালকদেরও ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অটোচালক আলমগীর হোসেন বলেন, এ সড়কে অটো চালাতে দুর্ভোগে পড়তে হয়। কেননা এ সড়কের বিভিন্ন স্থানে বিশালকায় গর্ত। এসব গর্তের কাছে যেতেই মনে হয় কখন জানি অটোটি উল্টে যায়।
ভ্যানচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, এ সড়কেই ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। এখন সড়কের যে অবস্থা হয়েছে তাতে ভ্যান চালানো কঠিণ হয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, সড়কটি দিয়ে চলাফেরার দুর্ভোগ দিন দিন বাড়ছে। ফলে এ পথে চলতে এখন ভয় হয়।
ওই সড়কের পাশে ভাট্টা মিলন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় অবস্থিত। ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. দুলাল মিয়া বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে এ রাস্তাটির উন্নয়ন হয়নি। খারাপ রাস্তার কারণে যানবাহনের ভাড়া বেশি দিতে হচ্ছে। যাতায়াতে অতিরিক্ত সময়ও নষ্ট হচ্ছে, কষ্টও দিন দিন বাড়ছে। ফলে অনেক সময় শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত হতে পারে না এ সড়কের পাশে থাকা বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ও মাদ্রাসার অনেক ছাত্র-ছাত্রীরা।
ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রফিক,শহিদ,শফিক,নিলুফা জানায়, গাড়িতে ওঠেই ভয়ে থাকি কখন গাড়ি উল্টে যায়। এভাবে পথ চলতে সময় ও কষ্ট দুটোই বেশি লাগে।
রামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মদন চন্দ্র সিংহ বলেন, তারাকান্দা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাহেলা পর্যন্ত সড়কের পিচ ঢালাই উঠে অসংখ্য ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে । পথ চলতে গিয়ে প্রতিদিনই কেউ না কেউ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন । সড়কটি মেরামতের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার বলেছি।
তারাকান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফজলুল হক জানান, এ সড়কে চলতে গিয়ে অনেকেই যন্ত্রনায় পড়েন বলে জানিয়েছেন। সড়ক মেরামতের ব্যাপারে আগামী সমন্বয় কমিটির সভায় তা উত্তাপন করব।
তারাকান্দা উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. শেরেকুল ইসলাম বলেন, ভাঙা সড়কটি সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে সংস্কার করা হবে।