গফরগাঁওয়ে নিখোঁজের তিনঘন্টা পর জঙ্গল থেকে কিশোরীর আগুনে পোড়া লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ৮:১০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০২১

গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা  :
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের কদমরসুলপুর গ্রামে জঙ্গল থেকে এক কিশোরীর আগুনে পোড়া ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত কিশোরীর নাম মারুফা (১৫) খাতুন। তার পিতার নাম মোঃ মজিবুর রহমান। ঘর থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হওয়ার তিনঘন্টা পর বুধবার (২৯ মার্চ) ভোররাতে কদমরসুলপুর গ্রামের মাইজপাাড়ার এলাকার নির্জন চৌরাভিটা জঙ্গল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশে হাত ও পায়ে বাধাঁর দাগ ছিল।
নিহত মারুফা ২০১৮ সালে পার্শ্ববর্তী ত্রিশাল উপজেলার রায়েরগ্রাম আইয়ুবীয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। করোনা শুরু হওয়ার পর সে পড়ালেখা বন্ধ করে দেয়।

গফরগাঁও থানা পুলিশ মারুফার লাশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
নিহতের দিনমজুর পিতা মুজিবুর রহমান (৫১) জানায়, বরাবরেই মতই তার মেয়ে মারুফা মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে রাতের আহার শেষে তার ( মারুফার) ছোট বোন রহিমা আক্তারের সাথে একই বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ে। গভীর রাতে মারুফা প্রকৃতির ডাকে ঘর থেকে বের হয়ে আর ঘরে ফিরে না আসায় ছোট মেয়ে রহিমা বড় বোন রহিমার ঘরে ফিরে না আসার খবর তার পিতা-মাতাকে জানায়। সে (মারুফার পিতা মুজিবুর রহমান) তার দুই ভাইকে ( মারুফার চাচা) নিয়ে রাতেই মারুফাকে খুঁজতে বের হয়। ভোর রাতে (৫টার দিকে) বাড়ি থেকে চারশত গজ দুরে নির্জন চৌরা ভিটা জঙ্গলে তার মেয়ের আগুনে পোড়া ক্ষত বিক্ষত লাশ পড়ে থাকতে দেখে। কিশোরী মেয়ের আগেনে পোড়া, ক্ষত বিক্ষত বিভৎস লাশ দেখে হতবিহবল পিতা তার গায়ের চাদরটি তার খুন হওয়া মেয়ের শরীরে বিছিয়ে দেয়। লাশের পাশেই একটি গাছের ডালে একটি বিছানার চাদর ঝুলছিল।

 

খবর পেয়ে থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। সিআইডি পুলিশের ক্রাইমসিনের সদস্যরা জায়গাটি ঘিরে রেখেছে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করছে। ঘটনাস্থলের একশ গজ দুর থেকে পুরুষের একজোড়া জুতা থানা পুলিশ উদ্ধার করে।
মারুফার মা বেদেনা আক্তার (৪৮) জানায়, তার মেয়ে পর্দা করতো তবে একটু বোকা ধরনের ছিল। সব সময় হাসতো। এইজন্য তাকে কবিরাজি চিকৎসাও দেওয়া হয়েছিল। কিভাবে এই নৃশংস ঘটনা ঘটলো তা সে ধারনা করতে পারছে না।

মারুফর বোন রসুলপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী রহিমা (১৪) জানায়, রাতে খাবার খেয়ে তার বোন মারুফা তার সাথেই ঘুমিয়ে ছিল। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে গভীর রাতে মারুফা ঘর থেকে বের দীর্ঘক্ষন পরেও ফিরে না আসায় বাবা-মাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে সে ঘটনাটি জানায়।
মারুফা চাচী আজিরা খাতুন (৩৫) ভোরবেলায় জঙ্গল থেকে মারুফার লাশ উদ্ধারের খবর তারা জানতে পারে।

গফরগাঁও থানার ওসি ফারুক আহম্মেদ বলেন, লাশটি আগুনে পোড়ানো ছিল। হাত ও পায়ে বাঁধার দাগ ছিল। তদন্ত ছাড়া হত্যার কারন বলা যাচ্ছে না।